মা লক্ষ্মীর আটটি রূপ

 লক্ষ্মী ঠাকুর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা 

শাস্ত্রে অষ্টলক্ষ্মীর কথা শাস্ত্রে আছে । 

মা লক্ষীর আটটি রূপ আছে ।

................................................

মাতা আদিলক্ষ্মী, মাতা ধনলক্ষ্মী,

মাতা ধান্যলক্ষ্মী, গজলক্ষ্মী মাতা,

মাতা সন্তানলক্ষ্মী, বীরলক্ষ্মী মাতা, বিজয়ালক্ষ্মী মাতা ও মাতা বিদ্যালক্ষ্মী ।

...................................................

তবে কখনো কখনো 

সংখ্যাটি হয়ে যায় দ্বাদশ। 

তাই দ্বাদশ মহালক্ষীর 

মাহাত্ম্য কথাই বলা ভালো।

.....................

সনাতন হিন্দু ধর্মানুসারে, 

মহালক্ষী হলেন জীবাত্মা হতে 

পরমাত্মার নিত্যানন্দের সৎচিদানন্দ

পরব্রহ্মের চেতনার আধার। 

...................

এখানে আধারের অর্থঃ

মা লক্ষীর hd ছবি
মা লক্ষী


সম্পদ ও ঐশ্বর্যের মূর্ত রুপ। 

জীবাত্মা হতে পরমাত্মার স্বরুপতত্ত্বে, জীবনীশক্তি, আত্মশক্তি, জ্ঞানশক্তি, ইচ্ছাশক্তি, ক্রিয়াশক্তি ও মূলাশক্তির 

স্বারশ্বত স্বারতত্ত্ব চিরন্তন সত্য।


মূলাশক্তির মূলতত্ত্ব মূলসত্যর অর্থ হলোঃ

..............................

সংক্ষেপে শিকড় ছাড়া গাছ, জল ছাড়া মাছ, বায়ু ছাড়া জীবন আর সূর্য ছাড়া ব্রহ্মাণ্ডের মহাজাগতিক সংসারে মৃত্যু যেমন অবধারিত এবং চিরন্তন সত্য তেমনি জীবাত্মা হতে পরমাত্মা পর্যন্ত, মহালক্ষী ছাড়া জীবন- জীবিকা আর প্রাণের বিকাশ ও উৎকর্ষতা বিকাশিত হবার প্রকাশশক্তি অবরুদ্ধ হয়ে ক্রমশ মৃয়মান, নিষ্ক্রিয় ও নিস্পৃহ হয়ে মৃত্যুর করালগ্রাসে পতিত হয় এই কথা অতিধ্রুব সত্য।

...................

জল ছাড়া যেমন পৃথিবী শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়ে যায় তদ্রূপ মহালক্ষীর কৃপা ছাড়া জীবকুলে প্রকাশ হয় দৈনতা, দারিদ্র্যতা, মানসিক-শারীরিক-স্নায়বিক- দৈহিক পঙ্গুতা, রোগ-ব্যাধি, জ্বালা-যন্ত্রণা, বেদনা-শুষ্কতা বৃদ্ধি পেয়ে জীবকুল যমলোকের যন্ত্রণা ভোগ করে 

অবশেষে মহামৃত্যুকে লাভ করে। 

...................

মহালক্ষ্মীর অভাবে ইন্দ্রদেব স্বর্গচ্যুত হয়েছিলেন। মহালক্ষ্মীর অভাবে ভগবান শ্রীমান নারায়ণ শনি মহাদেবের ক্রোধে গণ্ডকী নদীর তীরে খন্ড খন্ড রুপে নারায়ণ শীলায় পরিনত হয়েছিলেন। 


মহালক্ষ্মীর অভাবে ব্রহ্মার শিরচ্যুতি(পাঁচ মাথার এক মাথা ছিন্ন) হয়েছিল। মহালক্ষীর অভাবে মহাদেব সতি ছাড়া হয়ে বৈরাগ্যচারি শ্মশানচারি জীবন বেছে নিয়েছিলেন। 


মহালক্ষ্মীর অভাবে ভগবান শ্রীরাম অযোধ্যা নগরী ছেড়ে নৈমিষারন্যের জঙ্গলে থেকে শেষ জীবন পর্যন্ত তার অযোধ্যা রাজ্য  শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করতেন।

.........................

মহালক্ষ্মীর অভাবে মহারাবন তার 

স্বর্নলংকা হারিয়ে মৃত্যুকে লাভ করেছিলেন।


এককথায় মহালক্ষ্মী যার গৃহে নেই

তার গৃহে কেবলমাত্র  শ্মশানের শান্তি 

আর যমলোকের মৃত্যুপুরীর ভয়াবহতার 

অন্ধকার  বিরাজ করে। 


মহালক্ষ্মীর দ্বাদশ প্রকার রুপ হলোঃ

--------------------------------------------------------


(১) মহালক্ষীঃ আদিলক্ষ্মী রুপে ইনি মহাঋষি ভৃগুর  কন্যা অবতার। দেবীর অপর নাম সাগরকন্যা। পৃথিবীতে তিনি হিমালয় পর্বত রুপে প্রকাশিত। সমুদ্র মন্থনের সময় এই আদি মহালক্ষ্মী প্রকটিত হন। ব্রহ্মার গৃহে তিনি মাতা গায়ত্রী। বিষ্ণুর গৃহে তিনি মাতা মহালক্ষ্মী। শিবের গৃহে তিনি মাতা মহাগৌরী। 

...........................................

(২) ধনলক্ষ্মীঃ দেবী সাধককের সকল বৈষয়িক সুখ সমৃদ্ধি প্রদান করেন এবং 

তার  সম্পত্তি রক্ষা করেন ।

...............................

(৩) ধান্য লক্ষ্মীঃ দেবী কৃষকের সম্পদসিদ্ধি প্রদান করেন। তিনি কৃষকের গৃহে নবান্নে ধান্য লক্ষী রুপে পূজিত হন। বেদোক্ত শাস্ত্রে এই দেবীর গুপ্তনাম গৃহলক্ষ্মী। 

..................................

গৃহলক্ষীর অর্থঃ 


সংসারের মাতা, স্ত্রী ও কন্যা। 

কৃষকের অর্থঃ পিতা ও পুত্র। 

জমির অর্থঃ এখানে গর্ভ। 

ধান্যলক্ষ্মীর হাতে ধানের শীষ অর্থঃ বহুপুত্র ও কুলবৃদ্ধি( নাতি নাতনীর বংশের গতিধারা যেন চলতে থাকে বা নির্বংশ না হওয়া)।

..........................

আয়ভারঃ ধানের গোলা রুপক সম্পদের প্রাচুর্য যেন বজায় থাকে। 


সামনে প্যাঁচা: সংসারের স্ত্রীগন যেন বহিশক্রু হতে সজাগ ও সচেতন থাকার নির্দেশ। কারণ প্যাঁচা দিনে দেখতে না পেলেও রাত্রিতে খুব ভালো দেখতে পায়। 


ছিড়া খই কদমা নারকেলের ভোগঃ পিতৃপুরুষ যেন সন্তুষ্ট হয়ে সন্তানকে সুখে শান্তিতে থাকার আশীর্বাদ করেন।


নৌকাঃ সংসার সমুদ্রের দুঃখ কষ্ট অভাব ও দারিদ্র‍্যের তরঙ্গে যেন সংসারের নৌকা ডুবে না গিয়ে মাঝি রুপে কর্তা যেন তার সংসার নৌকার বৈঠা বয়ে নিয়ে যেতে পারে।

.........................

কোজাগরী লক্ষী পূজা 

তাই আর্থিক সম্পদের সাধনা নয়।


কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার অর্থঃ 


সংসারে নারীর সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা ও নারী রুপে মহালক্ষীর তুষ্ট করার সম্পদ ও সৌভাগ্যের সাধনা।


(৪)গজলক্ষ্মীঃ গবাদিপশু হাতি ঘোড়া হতে যে সম্পদ ও সম্পত্তি লাভ হয় তিনিই গজলক্ষী। এই দেবীর আরাধনা করে ইন্দ্র তার হারানো স্বর্গ ফিরে পেয়েছিলেন। বসুধা নারায়ণ হাতিদের দ্বারা পূজিত হচ্ছে দেখে দেবীর নামকরণ করেন গজলক্ষী। মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পূর্ণিমায় এই দেবীর আরাধনা করলে জীব তার হারানো স্বাস্থ্য, সম্পত্তি ও রাজ্য ফিরে পায়।

.........................

(৫) সন্তানলক্ষ্মী(কোলে গনেশ)ঃ মাতা লক্ষ্মীর এ স্বরুপের আরাধনা করলে সন্তানসুখ প্রাপ্তি হয়। সন্তান বংশের মুখ উজ্জ্বল করে।


(৬) বীরলক্ষ্মীঃ যুদ্ধক্ষেত্রে বীরত্ব ও জীবনের কঠিন সময়ে ধৈর্য ও সাহস প্রদান করে।


(৭) বিজয়লক্ষ্মীঃ জীবনের কঠিন সময়ে বাধা বিপত্তি জয় করে, সাফল্য অর্জন করতে সাহায্য করেন।


(৮) বিদ্যালক্ষ্মীঃ দেবী সাধকদের সকল জ্ঞান, বিজ্ঞান, কলা, রুপ- লাবণ্য, ও সিদ্ধিধন প্রদান করেন।


(৯) ঐশ্বর্যলক্ষ্মীঃ মাতা লক্ষ্মীর এ রুপের আরাধনা করে কুবের লক্ষ্মী মাতার বিপুল ধন-সম্পদ-সম্পত্তি, রত্ন-স্বর্ণ-মণিমাণিক্য, স্ফটিক ও সোনার সিংহাসন প্রাপ্ত করেছিলেন। 


দেবী সাধককে ত্রয়োদশ প্রকার ধন সম্পত্তি প্রদান করেন বলে দেবীর অপর নাম ধনত্রয়োদশী মাতা বা ধনত্রেরাচ মাতা। 

এই সময় দেবীকে ইক্ষুদন্ড বা আঁখের ভোগ দিলে দেবী অতি প্রসন্ন হয়ে গৃহস্থ বা সাধকের সুখ ও শান্তি প্রদান করেন।


আয়ুর্বেদ আচার্যগন এই ত্রয়োদশ তিথিতে স্বর্গ লোকের বৈদ্য, ধন্বন্তরি ভগবানের কৃপালাভ করার জন্য পূজাপাঠ ও তপস্যা আরম্ভ করতেন। সেই সাথে কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে আয়ুর্বেদিক আচার্যগন, বনজ, অরন্যজ, স্থলজ, জলজ, বৃক্ষের মূল পত্র বাকল ফুল ও ফল দ্বারা আয়ুর্বেদিক ঔষধি প্রস্তুত করতেন।


(১০) সৌভাগ্যলক্ষীঃ মাতার এ স্বরুপের আরাধনা করলে মানুষের জীবনে দুর্ভাগ্য, গ্রহ ও নক্ষত্র জনিত দোষ,দারিদ্র্যতা, মানসিক অশান্তি, গৃহকলহ, মামলা জনিত সমস্যা ও ক্ষতি, শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা দূর হয়ে যায়।


তবে অসদাচার, কদাচার, মিথ্যাচার, ব্যভিচার, কপটতা, দূর্নীতি ও দূরব্যবহার করলে এই দেবীর আরাধনায় জীবের কোন প্রকার ফলাফল লাভ হয় না।

...............

১১) রাজলক্ষ্মীঃ যিনি রাজাকে আশীর্বাদ করেন ধন সম্পত্তি, ঐশ্বর্য, প্রাচুর্য, বীরত্ব, যশ, মান-সম্মান-খ্যাতি প্রতিষ্ঠা আর প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করেন তিনি রাজলক্ষ্মী দেবী।

 

মহারাবন রাজলক্ষ্মী দেবীর তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করে ধন-সম্পত্তি, ঐশ্বর্য-প্রাচুর্য, বীরত্ব, যশ, মান-সম্মান, খ্যাতি প্রতিষ্ঠা আর প্রতিপত্তি লাভ করেছিলেন এবং তিনি স্বর্ণের লংকাপুরী রাজ্যও দেবীর বরদান রুপে লাভ করেছিলেন।


উনার রাজলক্ষ্মীর নাম ছিল মাতা ক্ষীরভবানী। রাবণের মৃত্যুর পর পবনপুত্র শ্রী হনুমান যখন ভগবান শ্রী রাম চন্দ্র, মাতা সীতা এবং শ্রীমান লক্ষণকে কাঁধে নিয়ে অযোধ্যা রাজ্যের অভিমুখে আসছিলেন তখন মাতা ক্ষীরভবানী সংকটমোচনকারী ভগবান শ্রী হনুমান কে অনুরোধ করেন তিনি যেন দেবীকে হিমালয়ের তুলমুল্লা পাহাড়ের পাদদেশে শ্রীখন্ডে (জম্মু কাশ্মীরের শ্রী নগর জেলায়) রেখে আসেন। 


কাঁধে যেহেতু তিনজন ছিলেন সেহেতু হনুমানজি দেবী ক্ষীরভবানীকে বুকের ভেতর লুকিয়ে দেবীকে এই বরফাচ্ছিদ অঞ্চল হিমালয়ের শ্রীখন্ডে পার্বত্য অঞ্চলের জলাশয়ের মধ্যে রেখে আসেন।

...................

হনুমানজির বুক হতে দেবী ক্ষীরভবানী বের হওয়া মাত্রই তিনি পাথরের মূর্তি ধারণ করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে জলাশয়টি দুধে পরিনত হয়ে যায়। এই ক্ষীরভবানীর অপার লীলা অতি বিস্ময়কর ও মুগ্ধতার মাহাত্ম্য প্রকাশ করে। 


ভারতের সমৃদ্ধির সময়ে এর জল লাল, উন্নতির সময়ে এর জল গোলাপী, অস্থিরতার সময় এর জল ধূসর সাদা, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মহামারী যুদ্ধের সময়ে 

এর বর্ণ কালো হয়ে যায়। 

............

ভক্তগন দেবীকে তাদের সুখ শান্তি ঐশ্বর্য ও মনোবাঞ্ছা পূরণের জন্য মাতা ক্ষীরভবানীকে দুধ, দই, মধু, নারকেলের জল দিয়ে দেবীকে স্নান ও পূজা করেন। 


মহাবৈষ্ণবী শক্তির আধার এই ক্ষীরভবানী মাতা এমনি অতি জাগ্রত বহুদূরে থেকেও যে ভক্ত "জয় মা ক্ষীরভবানী" এই ধূন 

যে মহানন্দের সঙ্গে ৭ বার উচ্চারণ করেছে 

তার জীবনে সকল বাধা বিপত্তি সংকট 

দূর হয়ে যায়।

..................

নবরাত্রির মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী, তিথিতে যে ভক্ত বৈষ্ণবীদেবী উদ্দেশ্য

মাতা ক্ষীরভবানীর নামে দুধ, ফল, মিষ্টান্ন, নারকেলের নাড়ু, নারকেল ভোগ প্রদান করে দেবী তার উপর অতি প্রসন্ন ও সন্তুষ্ট হয়ে ভক্তের মনোবাঞ্ছিত ফল প্রদান করেন।


(১২) বরদালক্ষ্মীঃ এই মহালক্ষ্মী মাতার আরাধনা করলে অবিবাহিত কন্যা সুন্দর বর পায়। অবিবাহিত পুরুষ সুন্দর স্ত্রী পায়। সাধকের সিদ্ধিলাভ দ্রুত করায়ত্ত হয়।


🎇কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার মাহাত্ম্যঃ

--------------------------------------------------


নিশিথে বরদা লক্ষ্মী 

কো জাগর্ত্তীতিভাষিনী 

তস্মৈ বিত্তং প্রযচ্ছামি 

অক্ষৈ ক্রীড়াং করোতি যঃ॥


🎈কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার রাত্রে দেবী বরদালক্ষ্মী জগতের ভূমন্ডলে বিচারন করে খোঁজ নেন কে জেগে আছে? 

............

যে জেগে অক্ষ ক্রীড়া করে বরদালক্ষী সেই সাধককে যোগবিভূতির বর প্রদান করেন।


🎈হঠযোগ সংহিতা অনুসারে এর মর্মার্থ হলোঃ 


কো জাগর্ত্তির অর্থঃ মানব শরীরের কার চক্রোতীর্থ জেগে আছে? 


যোগীক অক্ষক্রীড়ার অর্থঃ ক্রিয়া ওম কার যোগক্ত সাধনা, ক্রিয়া মুদ্রাযোগ সাধনা, ক্রিয়া প্রাণযোগ সাধনা।


🎈অক্ষক্রিয়াকর্ম পদ্ধতি হলোঃ 


ক্রিয়াযোগ সাধনার আহুতি সাধনার অন্তর্গত মনোলয়যোগ সাধনা। অর্থাৎ প্রাণের মধ্যে প্রাণের, আহুতি দেওয়ার যে যজ্ঞরুপ সাধনা, তার নাম অক্ষ ক্রিয়াযোগ সাধনা। 


সংক্ষেপেঃ শ্রীমদ্ভগবত পুরাণ অনুসারে অক্ষর ব্রক্ষযোগ সাধনা।


🎈অক্ষক্রীড়ার অর্থ তাই রাত জেগে পাশা বা জুয়া খেলা বোঝানো হয় না। রাত জেগে পাশা খেলে মহালক্ষ্মীর বর লাভ করার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।


🎴আর কে জেগে আছে? 


তার মর্মার্থ হলোঃ আত্মার জাগরণ। 

যে মানবের আত্মশরীরের জীবাত্মা জেগে আছে, সে সাধকের আত্মা জীব মুক্ত অবস্থা লাভ করে পরমার্থিক ব্রক্ষজ্ঞানকে লাভ করে মোক্ষ লাভ করে থাকেন। 


🎇কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার মূলজ্ঞানতত্ত্ব স্বরূপ তত্ত্বজ্ঞান হলো আত্মার চৈতন্যের বাণী। জগত সংসারে যে মানব মায়া মোহ এবং শোকের বন্ধন হতে আত্মাকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন তিনিই বরদালক্ষ্মী কৃপায় মুক্তকাম হয়ে বৈকুণ্ঠগামী হয়েছেন। 


🎇যিনি সত্যগুণ প্রধান একমাত্র তিনিই মহালক্ষী দেবীর আশীর্বাদ লাভে সক্ষম হন।


উপনিষদের তাই পরমার্থিক পরমানন্দপ্রদায়ি বাণীঃ


উত্তীষ্ঠ জাগ্রত কুরু মাং ভবো

দূর্বলাং কিংবা ভয়ো 

তমসা মাং জ্যোতির্ময় চলো

প্রাপ্য বরান্ নিবোধত।


হে অমৃতস্য পুত্র, জগতের মোহ মায়া শোক হতে উঠে দাঁড়াও। কোন ভয়ে তুমি দূর্বল হয়ে আছো? মনের তমসাচ্ছন্ন অন্ধকারকে দূর করে জ্যোতির্ময় স্বত্তার দিকে এগিয়ে চলো। তোমার প্রাপ্য বরলাভে সচেষ্ট হও।


যার জীবাত্মা ঘুমিয়ে আছে 

তার কি রুপে জন্ম-মৃত্যুর কালাকালচক্র হতে মুক্তি পাওয়া সম্ভব? 


হতভাগ্য সে জীবাত্মা 

যার কাছ থেকে 

দৈবশক্তি ফিরে যায়।


মনের রুদ্র দুয়ার বন্ধ রেখে

কারো পক্ষে শান্তি-সন্তুষ্টি,

সুখ ও স্বস্তি পাওয়া সম্ভব নয়। 

যতক্ষণ না পর্যন্ত 

আত্মার আত্মাচৈতন্য লাভ হচ্ছে।


==============================


🌹জয় মা শ্রীং মহালক্ষ্মী 

বিষ্ণুপত্নী নমোহস্তুতে।🌹

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url