ভগবান কে ও ভগবান শব্দের প্রতিশব্দ

পরাশর মুনি ;ভগবান; শব্দটির 👉সংজ্ঞা প্রদান করেছেন । ;ভগ; অর্থ ঐশ্বর্য্য এবং;বান; অর্থ অধিকারী , যার 👉আছে । জান অনেক রুপ আছে  তাকে আমরা বলে থাকি রূপবান আবার যার অনেক ধন আছে আমরা তাকে বলি ধনবান ঠিক তেমনি বা তদ্রুপ যিনি ভগ অর্থাত্ ঐশ্বর্যের অধিকারী তাকে বলা হয় ভগবান।সংক্ষেপে আমরা বলতে পারি যার মধ্যে পাঁচটি বিশেষ গুণ রয়েছে তিনিই ভগবান। 

ভগবান কে? ভগবান শব্দের প্রতিশব্দ
 ভগবান কে? ভগবান শব্দের প্রতিশব্দ

মুনি পরাশর ভগবান শব্দটির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন-

"ঐশ্বর্য্যস্য সমগ্রস্যবীর্যস্য যশসঃ শ্রিয়ঃ,জ্ঞানবৈরাগ্যয়োশ্চৈব ষন্নত্ ভগইতিঙ্গনা ॥"

যার মধ্যে এই ছয়টি গুন পূর্ণমাত্রায় বর্তমান, তিনি হচ্ছেন ভগবান - সমস্ত ঐশ্বর্য্য ,সমস্ত বীর্য্য ,সমস্ত যশ ,সমস্ত শ্রী ,সমস্ত জ্ঞান এবং সমস্ত বৈরাগ্য । এই জগতে কেউ বড় ধনী হতে পারে, কিন্তু  আমি সমস্ত ধনের মালিক এটা কেউ কেউ দাবী করতে পারেনা। এই জগতে কেউ অনেক জ্ঞানী ব্যক্তি হতে পারে ,কিন্তু দাবী করতে পারে না সমস্ত জ্ঞানের অধিকারী সে। কিন্তু অপরদিকে ভগবান সমস্ত ধন ,সমস্ত যশ ,সমস্ত শক্তির অধিকারী ,সমস্ত জ্ঞান ,সমস্ত সৌন্দর্য্য , তাই তাকে বলা হয় ভগবান । বেদান্ত সূত্রের প্রথম শ্লোকে বলা হয়েছে পরম ব্রহ্ম ভগবান সর্ম্পকে ;অথাতো ব্রহ্ম জিজ্ঞাসা ; কে সেই পরম ব্রহ্মটিভ ? জন্মদস্য যতঃ;  তার উত্তরে দ্বিতীয় শ্লোকে বর্ননা করা হয়েছে ; 

এই সুত্রটি শ্রীমদ্ভাগবতের ব্যাসদেব তার শ্লোকে সংযোজন করেছেন। জন্মদস্য যতোহন্বয়াদিতরত শ্চার্থেষ্বভিজ্ঞ স্বরাট্ ; জন্ম আদি অস্য যতঃ --জগত অনন্তকোটি ব্রহ্মান্ড যা হতে এ দৃশ্যমান  ,জন্ম আদি অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন সৃষ্টি স্থিতি ও প্রলয় পরম ব্রহ্ম ভগবান।

" অহংসর্বস্য প্রভবো মত্তঃ সর্বং প্রবর্ততে ।"

ইতি মত্বা ভজন্তে মাং বুধা ভাবসমম্বিতাঃ ॥ ভগবদগীতাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বর্ননা করেছেন আমি সমস্ত কিছুর উৎস ও সবকিছু আমার কাছ থেকে উৎপত্তি হয়েছে । অর্থাত্

ভগবান হচ্ছেন সবকিছুর স্রষ্টা , সবকিছুর পালন করেন এবং তিনি সবকিছু সংহার করতে পারেন । এভাবে ভগবান সর্বশক্তিমত্ত্বা সর্ম্পকে শাস্ত্রে বর্ননা করা হয়েছে । ভগবানকে কেউ ঈশ্বর বলে সম্বোধন করে থাকেন । তাই ঈশ্বর শব্দটির

অর্থ আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন । শাস্ত্র

বা শব্দকোষ অনুসারে ঈশ্বর শব্দের অর্থ হচ্ছে -নিয়ন্ত্রণ বা নিয়ন্ত্রণ কর্তা অর্থাত্ যিনি নিয়ন্ত্রণ করেন ।এই জগতের প্রতিটি জীবের সীমিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রয়েছে , সেহুতু তাই তারা ঈশ্বর বলে মনে করতে পারে নিজেকে বা দেবতাদেরকে ঈশ্বর বলে গ্রহন করা যেতে পারে । তারা বিশ্বব্রম্মান্ডের কোন না কোন কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রন করে থাকেন। সেই পরমেশ্বরকে জানাই হচ্ছে জীবনের লক্ষ্য যিনি ঈশ্বরকে নিয়ন্ত্রণ করেন । পরমব্রহ্ম বা পরম ঈশ্বরকে নিয়ন্ত্রন করে থাকেন , তিনিই ভগবান । ভগবান শব্দটি সমাজে যেমন খুশি ব্যবহার হচ্ছে ,সেভাবে ব্যবহার করা উচিত নয় ।

এই শব্দটি ব্যবহার করা হয় যা শাস্ত্রবিরোধী বর্তমান সমাজ যেকোন যোগ- সিদ্ধি লাভ করা ব্যক্তির প্রতি। ধন্যবাদ সকলকে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url