দেবদেবী ও ঈশ্বরের মধ্যে পার্থক্য ও হিন্দুরা বহু দেবদেবীর পূজা করে কেন?

ঈশ্বর  এক ও নিরাকার, কিন্তু তার অনন্ত বিভূতি ও শক্তি । ভগবানের বিভূতির পরিচয় জানতে হলে দেবতাকে স্বীকার করতে হয় । দেবতারা হলেন অদ্বৈত ঈশ্বরের এক একটা অঙ্গ, যেমন কোন দেহের অংশ হলো হাত, পা, চোখ, কান প্রভৃতি । ঈম্বরের শক্তির কোন ধারণাই আমরা সাধারণ ভাবে করতে পারি না ! কিন্তু ঈম্বরের শক্তিকে ধারণা করা যায়  একজন দেবতার মধ্যে

 
(১) "ঈশ্বরঃ" "ঈশ্বর" এক ও অদ্বিতীয়। ঈশ্বর= ঈশ + বর। "ঈশ" শব্দের অর্থ মালিক, শাসক এবং "বর" শব্দের অর্থ সেরা, চমৎকার, সুন্দর। অর্থাৎ "ঈশ্বর" শব্দের অর্থ হলো-- সেরা মালিক, চমৎকার শাসক।। ঈশ্বর সর্বশক্তিমান। তিনি অনাদির আদি। ঈশ্বর একজনই। ঈশ্বর সর্বব্যাপী। তিনি এই জগৎকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই এই জগৎকে পালন করেন, তিনিই এই জগৎকে ধ্বংস করেন। এই এক ঈশ্বরকেই আমরা বিভিন্ন নামে ডাকি।। "একং সদ বিপ্রা বহুধা বদন্তি"।। (ঋগ্বেদ- ১/৬৪/৪৬) অর্থঃ সেই এক ঈশ্বরকে পন্ডিতগণ বহু নামে ডেকে থাকেন। "একো বশী সর্বভূতান্তরাত্মা একং রূপং বহুধা যঃ করোতি"।। (কঠোপনিষৎ- ২/২/১২) অর্থঃ একক বশকর্তা, সর্ব ভূতের অন্তরাত্মা, যিনি (ঈশ্বর) নিজের এক রূপকে বহু করেছেন। [[ আমরা তাকে সংস্কৃতে বলি "ওঁ(ওম)"।। আরবিতে বলি "আল্লাহ"।। ইংরেজিতে বলি "গড"।। ]] 

(২) "পরমেশ্বর ভগবানঃ" পরমেশ্বর ভগবান= পরম + ঈশ্বর + ভগবান। "পরমেশ্বর ভগবান" শব্দের অর্থ হলো সর্বশক্তিমান সর্বশ্রেষ্ঠ ঈশ্বর/ভগবান। 

(৩) "ভগবানঃ" "ভগবান" মানে যার মধ্যে সমস্ত গুণ বা ঐশ্বর্য পূর্ণ মাত্রায় বিরাজমান। ভগবান= ভগ + বান। "ভগ" শব্দের অর্থ ঐশ্বর্য বা গুণ এবং "বান" শব্দের অর্থ অধিকারী। অর্থাৎ যিনি সমস্ত ঐশ্বর্যের অধিকারী তিনি হলেন "ভগবান"।। 

★ "পরাশর মুনি" "ভগবান" শব্দের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন--- ঐশ্বর্য্যস্য সমগ্রস্য বীর্যস্য যশসঃ শ্রিয়ঃ। জ্ঞানবৈরাগ্যয়োশ্চৈব ষন্নৎ ভগ -ইতি-ঙ্গনা।। বাংলা অর্থ -- যার মধ্যে সমস্ত বীর্য ও ঐশ্বর্য,(( শক্তি)), সমস্ত যশ, সমস্ত শ্রী( (ধনসম্পদ)), সমস্ত জ্ঞান, সমস্ত বৈরাগ্য (মানসিক শান্তি) এই ছয়টি গুণ পূর্ণ মাত্রায় বর্তমান   হচ্ছেন তিনিইভগবান[[তাহলে তাকে ভগবান বলা যাবে না যদি কারো মধ্যে এই ৬টি গুণ পূর্ণমাত্রায় না থাকে । কিন্তু তাহলেই তাকে "ভগবান বলা যাবে যদি কারো মধ্যে এই ৬টি গুণ পূর্ণমাত্রায় থাকে ।। দেব-দেবীরা "ঈশ্বর বা ভগবান নন।। ]] 

ঈশ্বর ও দেবদেবী পার্থক্য সমূহ
ঈশ্বর ও দেবদেবী পার্থক্য সমূহ 

{{ শুধুমাত্র শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীশিব এই দুজনই হলেন "ভগবান"।। এই দুজন "আলাদা কেউ নয়"। এক ঈশ্বরই নিজেকে এই দুটি রূপে প্রকাশ করেছেন।। তাই শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীশিবকে আলাদা দুজন বলে মনে করা নিতান্তই মূর্খামি।। }} 

♣সুতরাং ঈশ্বর/ পরমেশ্বর ভগবান ও ভগবানের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।এই ছয়টি গুণ যদি করো মধ্যে    বিদ্যমান  থাকে তাহলে তাকে নিঃসন্দেহে ঈশ্বর,/ভগবান/পরমেশ্বর ভগবান বলা যাবে।শুধুমাত্র এটাই পার্থক্য যে-- "ঈশ্বর", "পরমেশ্বর ভগবান" ও "ভগবান" এই তিনটি শব্দের অর্থ আলাদা। এছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই।। }}

♣ ★★ এখন আমরা যদি বলি যে-- ভগবান ব্রহ্মা, ভগবান ইন্দ্র, ভগবান পবন, ভগবান হনুমান, ভগবান নৃসিংহ, ভগবান রাম, ভগবান লক্ষ্মণ, ভগবান গণেশ, ইত্যাদি। এগুলো ঠিক নয়।। কারণ--- ব্রহ্মা, ইন্দ্র, পবন, হনুমান, নৃসিংহ, রাম,সন্তোষী, গণেশ,  লক্ষ্মী, সরস্বতী ইত্যাদি এরা ভগবান নন। এরা হলেন-- দেব-দেবী। 

এখন আমরা জানব-- দেব-দেবী কাকে বলে? 

(৪)দেব-দেবীঃ দেব-দেবী ঈশ্বর  দেবদেবীর ব্যাপারে আরো একটি ব্যাখ্যা রয়েছে তা হলো আমাদের সনাতন ধর্মের ৯ টি উপনিষদ আছে তার মধ্যে কঠো উপনিষদ থেকে, বিষ্ণু পুরাণ, ভাগবৎ এবং গীতা থেকে উত্তর দিলাম।যদিও স্বাভাবিকভাবে মনে হয় ভগবানের ও  ঈশ্বরের  মধ্যে বিশেষ তেমন কোন পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না  তবু ও ধর্মীয় গ্রন্থ বিশ্লেষণ করলে এবং ঈশ্বরের প্রেম রসসিক্ত হয়ে লীলার রস আস্বাদন করতে গেলে কিছু মৌলিখ পার্থ্যক্য বিদ্যমান হয় সেগুলো নিচে তুলে ধরা হয়েছে - 

১। ঈশ্বর নিরাকার পক্ষান্তরে ভগবান সাকার। 

২। ঈশ্বর কোন লীলা বিলাশ করেন না তবে ঈশ্বর ভগবানের সাকাররূপ ধারণ করে ভক্তের সংঙ্গে লীলা বিলাশ করেন।

৩। ঈশ্বর হচ্ছেন নিরকার ও নিরগুন ব্রম্ম। অন্যদিকে ভগবান হচ্ছে স্ব-গুন সম্পন্ন নিরগুন ব্রম্ম। 

৪। ইশ্বর পৃথিবীতে সৃস্টি, স্থিতি, প্রলয় রক্ষারতে নিরকার থেকে সাকার রুপধারন করে এবং অবতার রুপে ব্রম্মান্ডে অবর্তীন হন। আর ইশ্বর যখন ধর্ম প্রতিষ্টা ও সাধুদের রক্ষা হেতু এবং অসুর ও অপশক্তিকে ধ্বংশ করার জন্য ভগবান রুপে আভির্ভুত হন বা অবতারী হন। 

৫। ঈশ্বর হচ্ছেন পূর্ণ বিভুতি। ভগবান হচ্ছে তাহার বিশেষ বিভুতি। 

৬। ঈশ্বর ব্রম্মান্তের সৃষ্টি, স্থিতি, প্রলয় রক্ষারতে ভগবানের ৬ রকমের অবতারী হন 

(ক) শক্তাবেশ অবতার, 

(খ) জ্ঞান অবতার,

(গ)অংশ অবতার,

(ঘ) পূর্ণ অবতার 

(ঙ) লীলা অবতার 

(চ)পুরুষোত্তম অবতার গুনাবলী নিয়ে অবর্তীন হন। 

৭। ঈশ্বরের পূর্ণ রুপের এবং ক্ষমতার প্রকাশ করার জন্য ভগবান আসেন ধরাধামে। 

৮। ঈশ্বর হচ্ছেন স্বয়ংম্বু। ভগবান তাহার সৃষ্টির প্রেরিত পুরুষ।

৯। ঈশ্বরের জন্ম মৃত্যু নাই। ভগবান লীলা বিলাশের জন্য দেহ আবরণ ধারণ করতে হয় এবং দেহ ত্যাগ করতে হয়। 

১০। ঈশ্বর সর্বশক্তিমান। ভগবান ঈশ্বরের শক্তিতে শক্তিমান যেমন দুধ থেকে ননী হয়, দই হয়, মাখন হয়। আবার মাখন থেকে দুধ হয়না দই হয়না ।।

সনাতনধর্মী বা হিন্দুরা  বহু দেবদেবীর পূজা করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যাখ্যাঃ
শিকাগো বক্তৃতায় স্বামী বিবেকানন্দ হিন্দুধর্ম ও অহিন্দুরা অনেকে বিশ্বাস করেন যে, আমরা হিন্দুরা বহু দেবদেবীর পূজা করে থাকি তবে এই ধারণা সর্বৈব ভুল। আমরা ব্রহ্ম বা এক ঈশ্বরকেই ভিন্ন ভিন্ন নামে ও ভিন্ন ভিন্ন রূপে আরাধনা করি। আসলে, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ তাঁদের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য ঈশ্বরের নাম ও রূপভেদ সম্পর্কে স্বতন্ত্র্য কিছু ধারণা পোষণ করেন। এই কারণেই, আজকের হিন্দুসমাজে ঈশ্বরের এত রূপবৈচিত্র্য আমাদের চোখে পড়ে। ইতিহাসের পথ ধরে হিন্দুসমাজে চারটি প্রধান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়েছে।যথা--

শৈব, শাক্ত, বৈষ্ণব ও স্মার্ত। 

শৈব-শৈবরা শিবকে।

বৈষ্ণব-বৈষ্ণবরা বিষ্ণুকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর মনে করেন।

শাক্ত-শাক্তেরা মনে করেন এই মহাবিশ্বে মহাশক্তিই সর্বেসর্বা। 

স্মার্ত মতটি অনেক উদারপন্থী। তাঁরা মনে করেন, সকল দেবতাই সর্বোচ্চ ঈশ্বর ব্রহ্মের স্বরূপ।তাই তাঁরা দেবতা নির্বাচনের ভারটি ভক্তের উপর ছেড়ে দেন। অবশ্য এও মনে রাখতে হবে যে, স্মার্ত মতটি হিন্দুধর্মে বহুল প্রচলিত হলেও, প্রধান মত নয়। সে যাই হোক, এই মতবৈচিত্র্যের জন্যই হিন্দুরা একে অপরের ধর্মমতের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল হয়ে থাকেন।

 শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস যেমন বলেছেন, ‘যত মত তত পথ।’ অর্থাৎ, সকল মতই সেই এক ঈশ্বরের কাছেই পৌঁছানোর এক একটি পথ।  হিন্দুধর্মের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হল এই যে, আমরা হিন্দুরা ঈশ্বরকে বহুদূরের স্বর্গে বসবাসকারী দেবতা মনে করি না। আমাদের ঈশ্বর বাস করেন আমাদের অন্তরে, আমাদের হৃদয়ে, আমাদের চেতনায়। শুধু তিনি অপেক্ষা করেন, যতক্ষণ না আমরা আমাদের মধ্যে স্থিত ঈশ্বরকে চিনে নিতে পারি। ঈশ্বর যে আমাদের সঙ্গেই থাকেন, এই কথাটি আমাদের আশা ও শক্তি জোগায়। তাই হিন্দু জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল সেই এক ও অদ্বিতীয় ব্রহ্মকে জানা।  আমরা হিন্দুরা একাধারে মনোথেইস্টিক (একেশ্বরবাদী) ও হেনোথেইস্টিক। আমরা পলিথেইস্টিক বা বহুঈশ্বরবাদী নই। 

কারণ আমাদের হিন্দুধর্মে সমক্ষমতাসম্পন্ন একাধিক দেবতার অস্তিত্ব স্বীকার করা হয় না। হেনোথেইজম্-ই হিন্দু মতবাদটির সঠিক সংজ্ঞা গতে পারে। এই মতবাদের মূল কথাটি হল, অন্যান্য দেবতাদের অস্তিত্ব স্বীকার করেও এক ঈশ্বরের আরাধনা করা। আমরা হিন্দুরা বিশ্বাস করি, এক সর্বব্যাপী ব্রহ্ম এই সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডের শক্তির উৎস। মানুষ সহ সকল জীবের জীবনের মধ্যেই আমরা তাঁকে প্রত্যক্ষ করি। সকল জীবের মধ্যে ঈশ্বরের অবস্থান ও ঈশ্বর কর্তৃক সকল জীবের প্রাণধারণের এই মতবাদটিকে বলে প্যানেনথেইজম। প্যানথেইজমের থেকে এটি আলাদা। কারণ, প্যানথেইজম বলে প্রাকৃতিক ব্রহ্মাণ্ডখানিই ঈশ্বর এবং তার বেশি কিছু নয়। অন্যান্য ধর্মের রক্ষণশীল ধর্মতাত্ত্বিকগণ মনে করেন, ঈশ্বর জগতের উর্ধ্বে, জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন এবং মানুষের অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধির অগম্য। হিন্দুধর্ম তা মনে করে না। প্যানেনথেইজম একটি সর্বময় ধারণা। এটি বলে, ঈশ্বর জগতের ভিতরে ও বাইরে দুই স্থানেই আছেন। তিনি একাধারে মানুষের চেতনার আয়ত্তাধীন, আবার অগম্যও বটে। এই বৃহত্তর ধারণাটিই হিন্দুর ধারণা।  

আমাদের হিন্দুদের বিভিন্ন শাখাসম্প্রদায়ে ব্রহ্মের নানান নাম প্রচলিত রয়েছে। এই নামবৈভিন্ন্যের কারণ সম্প্রদায়গুলির স্বতন্ত্র ধর্মীয় প্রথা ও রীতিনীতি। আর এই নামবৈভিন্ন্যই অহিন্দুদের যাবতীয় ভ্রান্ত ধারণার কারণ। হিন্দুরা পরম সত্যকে বিভিন্ন নামে চিহ্নিত করে, কিন্তু তাই বলে পরম সত্য স্বয়ং বিভিন্ন হয়ে যান না। এই বিভিন্ন নাম থেকে বিভিন্ন রূপের উৎপত্তি; কিন্তু প্রত্যেক রূপই সেই এক এবং অদ্বিতীয় ব্রহ্মের রূপান্তর-মাত্র।

 হিন্দুধর্মে ঈশ্বরের কাছে পৌঁছানোর অনেক পথের সন্ধান দেওয়া হয়েছে। আমরা হিন্দুরা প্রতিটি পথকেই অভ্রান্ত মনে করি। তাই কোনো একটি নির্দিষ্ট পথকে সকলের উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী আমরা নই। পথ নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা হিন্দুরা পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করি।অনেক হিন্দুর মধ্যেও ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে এবং তৎসঙ্গে এই বিষয়ে শুধু অহিন্দু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। ঈশ্বর ও দেবতার মধ্যে যে সূক্ষ্ম পার্থক্য বিদ্যমান, তা অনুধাবন করতে পারলেই এই ভ্রান্ত ধারণা দূর হয়।হিন্দুদের ধারণায় কোনো সংকীর্ণতা নেই ঈশ্বর সম্পর্কে। এখানে বলে রাখা ভাল, হিন্দুদের একাংশ নিরাকার ঈশ্বরেরও উপাসনা করেন। অন্যেরা দেবতাদের ব্যক্তিগত দেবতা (ইষ্টদেবতা বা কূলদেবতা) হিসেবে পূজা করেন। স্বামী বিবেকানন্দ এই প্রসঙ্গে একটি প্রণিধানযোগ্য উক্তি করেছেন, “যে একাগ্র সাধক জানু পাতিয়া দেববিগ্রহের সম্মুখে পূজা করেন, লক্ষ্য কর – তিনি তোমাকে কি বলেন, ‘সূর্য তাঁহাকে প্রকাশ করিতে পারে না; চন্দ্র তারা এবং এই বিদ্যুৎও তাঁহাকে প্রকাশ করিতে পারে না; এই অগ্নি তাঁহাকে কিরূপে প্রকাশ করিবে? ইহারা সকলেই তাঁহার আলোকে প্রকাশিত।’ 

(কঠ উপনিষদ ২।২।১৫; শ্বেতাশ্বেতর উপনিষদ ৬।১৪; মুণ্ডক উপনিষদ ২।২।১০) 

তিনি কাহারও দেববিগ্রহকে গালি দেন না বা প্রতিমাপূজাকে পাপ বলেন না। তিনি ইহাকে জীবনের এক প্রয়োজনীয় অবস্থা বলিয়া স্বীকার করেন। শিশুর মধ্যেই পূর্ণ মানবের সম্ভাবনা নিহিত রহিয়াছে। বৃদ্ধের পক্ষে শৈশব ও যৌবনকে পাপ বলা কি উচিত হইবে? হিন্দুধর্মে বিগ্রহপূজা যে সকলের অবশ্য কর্তব্য, তাহা নয়। কিন্তু কেহ যদি বিগ্রহের সাহায্যে সহজে নিজের দিব্য ভাব উপলব্ধি করতে পারে, তাহা হইলে কি উহাকে পাপ বলা সঙ্গত?” (‘হিন্দুধর্ম’, শিকাগো বক্তৃতা) বিশ্বের প্রাচীনতম জীবিত এবং সর্বাপেক্ষা ঐশ্বর্যশালী ধর্মমতের এই বৈশিষ্ট্য অনন্য। স্বামী বিবেকানন্দের ভাষায়, ‘বহুত্বের মধ্যে একত্বই প্রকৃতির ব্যবস্থা, হিন্দুগণ এই রহস্য ধরিতে পারিয়াছেন।’ (‘হিন্দুধর্ম’, শিকাগো বক্তৃতা)  


#tag;দেবতা ও ভগবানের মধ্যে পার্থক্য কি?দেবতা ইশ্বর ও ভগবানের মধ্যে পার্থক্য,দেবতা ও ভগবানের মধ্যে পার্থক্য,দেবতা ও ভগবানের মধ্যে পার্থক্য কি জেনে নিন?হিন্দুরা বহু দেবদেবীর পূজা করে কেন,হিন্দুরা কি সব দেব দেতাকে ভগবান মনে করে,ভগবান ও ঈশ্বরের মধ্যে পার্থক্য,ঈশ্বর ও দেবতার মধ্যে পার্থক্য কি?,ঈশ্বর ও ভগবানের মধ্যে পার্থক্য,ইশ্বর ও ভগবানের মধ্যে পার্থক্য কি,ভগবান দেবদেবীর মধ্যে পার্থক্য কোথায়,ভগবান ও দেবতাদের মধ্যে কি পার্থক্য।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url