বিসর্জনের সাত পাকের রহস্য
আমরা হিন্দুধর্মীরা বিভিন্ন পূজায় প্রতিমা বিসর্জন করি তখন আমরা প্রতিমাকে সাতপাক প্রদক্ষিণ করে বিসর্জন দেই।নিম্নে তার আসল কারণ বর্ণনা করা হলোঃ
সাতপাকের রহস্য দুর্গাসহ যেকোনো প্রতিমাকে বিসর্জন অর্থাৎ জলে ডুবিয়ে দেওয়ার সময় সেই প্রতিমাকে সাত পাক ঘোরানো হয়; এছাড়াও হিন্দুদের বিয়ের সময়ও বরের চারপাশে কনেকে সাত পাক ঘোরানো হয়। এর কারণ ম্যাক্সিমাম হিন্দুই জানে না বা বলা যায় ৯৯% হিন্দুই জানে না।
আপনারা জেনে অবাক হবেন যে,সাত পাক ঘোরানোর পিছনে রয়েছে এক অসাধারণ গাণিতিক তত্ত্ব।গাণিতিক তত্ত্বটি জানলে আপনি অবশ্যই অবাক হবেন।এতে মোটেও কোন সন্দেহ নেই।সেই সাথে আরও অবাক হবেন, এই তত্ত্বের আবিষ্কারক ও প্রচলক আমাদের মুনি ঋষিদের জ্ঞানের পরিধি ও এ সম্পর্কে তাদের দূরদর্শিতাকে উপলব্ধি করলে। যা হোক, রহস্য না বাড়িয়ে ভেঙ্গেই দিই তত্ত্বটি। কোনো বিন্দুকে কেন্দ্র করে যখন তার চারপাশে একবার বা একপাক ঘোরা হয়, তখন ৩৬০ ডিগ্রী অতিক্রম করা হয়। এই ৩৬০ কে ১,২,৩,৪,৫,৬,৮ এবং ৯ দ্বারা নিঃশেষে ভাগ করা যায়, অর্থাৎ ৩৬০ কে ৭ ছাড়া ১ থেকে ৯ এর মধ্যে যেকোনো সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে দেখবেন কোনো অবশিষ্ট ফল বিদ্যমান থাকে না; কিন্তু ৭ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল ৫১ এর পরে ৩ অবশিষ্ট থাকে এবং ৫১ এর পর দশমিক নিলেও এই ভাগ অনন্তকাল ধরে চলমান থাকে এবং থাকবেই অর্থাৎ ৭ দ্বারা ৩৬০কে ভাগ করলে ভাগফল কখনোই শেষ হয় না, এককথায় ৭ দ্বারা ৩৬০কে ভাগ করা যায় না অর্থাৎ ৭ দ্বারা ৩৬০ অবিভাজ্য। প্রতিমাকে বিসর্জনের সময় ৭ পাক ঘোরানো হয়ে থাকে,তারমানে সেই প্রতিমা এবং তার ভক্তদের মাঝে একটি অবিভাজ্য সম্পর্ক তৈরি করা হয়, যে সম্পর্ক কখনো ভাগ বা বিভক্ত হয় না বা হবে না; এভাবে দেব-দেবীদের সাথে হিন্দুদের একটি চিরকালীন সম্পর্কের কল্পনা করা হয়েছে।
বিসর্জনের সাতপাক রহস্য |
হিন্দুদের বিয়ের সময় এই একই ভাবনা বা থিম কাজ করে ,যাতে বরের চারপাশে কনেকে সাত পাক ঘুরিয়ে বা বর কনে একসাথে সাত পাক ঘুরে এতে করে বরের সাথে কনের অর্থাৎ স্বামীর সাথে স্ত্রীর একটি অবিভাজ্য সম্পর্কের বন্ধন তৈরি করা হয়, যে সম্পর্ক কখনো বিভাজ্য বা ভাগ হয় না অর্থাৎ শেষ হয় না। তাই হিন্দুত্বে তেমন অহরহ তালাক বা ডিভোর্স নেই এবং এ কারণেই হিন্দু মেয়েদের সাংসারিক জীবন নিশ্চিন্ত, তাই অহরহ তালাক বা স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে বাপের বাড়ি বা রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ানোর সংখ্যা ২% ও নেই। আর স্বর্ণের খাদ থাকার মত কিছু ত থাকেই যেগুলো নগন্য মাত্র। আর এখানেই সনাতন ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব।