ভগবতী রাধিকা কী মহালক্ষ্মী
অনেকের মনে একটি প্রশ্ন থাকে তা হলো ভগবতী রাধিকা মহালক্ষ্মী কিনা। কেউ কেউ তাকে আবার লক্ষী অংশা বলেন। আজ প্রশ্নের শাস্ত্রীয় প্রমাণ সহিত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। ভগবতী রাধিকা হলেন পরা মহালক্ষ্মী।। পরিপূর্ণতম পরমব্রম্ম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেকে দুটি ভাগে ভাগ করেছেন একটি দ্বিভুজ্ ও একটি চর্তুভুজ মুর্তিতে। যথা-- ---
শ্রী কৃষ্ণস্য দ্বিধা রুপ দ্বিভুজশ্চ চর্তুভুজঃ।
চর্তুভুজশ্চ বৈকুন্ঠে দ্বিভুজে গোলোকে স্বয়ম।। বৈকুন্ঠে তিনি চর্তুভুজ নারায়ণ ও গোলোকে স্বয়ম দ্বিভুজ্ কৃষ্ণ রুপে অবস্থান করছেন।
চর্তুভুজস্য পত্মীচ মহালক্ষ্মী সরস্বতী।
গঙ্গা চ তুলসী চৈব দেবী নারায়ণী প্রিয়া।। বৈকুন্ঠে চর্তুভুজ শ্রী নারায়ণ কৃষ্ণের পাশে মহালক্ষ্মী, সরস্বতী, গঙ্গা ও তুলসী প্রভৃতি নারায়ণ প্রিয়াগন অবস্থান করছেন। শ্রীকৃষ্ণ পত্নী সা রাধা নিত্যা গোলোকে স্থিতা। স্বয়ম দ্বিভুজ্ কৃষ্ণের নিত্যা পত্নী শ্রীরাধিকা গোলেকে অবস্থান করছেন।। পরমব্রম্ম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অভিন্না শক্তি তার অঙ্গ থেকে প্রকট হয়েছেন। যথ--শ্রী কৃষ্ণস্য প্রিয়া সা তদরধাঙ্গসম্ভুতা।। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অঙ্গ থেকে প্রকট হয়ে গোলোকে শ্রী ভগবতী রাধিকা নিজেকে দুটি ভাগে প্রকাশিত করেছেন । তার দক্ষিণ অঙ্গ থেকে রাধিকা ও বামাঙ্গ থেকে মহালক্ষ্মী। যথা-----তদবামাংশ্চ মহালক্ষ্মী দক্ষিণাংশ্চ রাধিকা।। দ্বিভুজো ও চর্তুভুজ উভয় স্বরূপেই মহালক্ষ্মী অবস্থান করছেন। যথা--চর্তুভুজায় দ্বিভুজো মহালক্ষ্মী দ্বয়ো পুরা।। অথাৎ শ্রী কৃষ্ণ ও নারায়ণ উভয় স্বরূপেই নিত্য শক্তি শ্রী মহালক্ষ্মী শ্রী রাধিকা ও লক্ষী রুপে অবস্থান করছেন। স্বয়ম পরাৎপর পরমব্রম্ম গোলোকেশ্বর শ্রী কৃষ্ণের শক্তি রাধিকা ও চর্তুভুজ বৈকুন্ঠেশ্বরে মহালক্ষ্মী অবস্থান করছেন। যথা----
দ্বিভুজো রাধিকাকান্ত লক্ষ্যাকান্ত চর্তুভুজঃ।। (ব্রম্ম বৈবর্ত পুরাণ) শ্রী রাধিকার দক্ষিণ অঙ্গ হতে আর্বিভূতা শ্রী রাধিকায় ব্রজলীলায় চন্দ্রাবলী ও বাম অংশ হতে আর্বিভূতা মহালক্ষী দ্বারকায় ভগবতী রুক্মিনী। আর মূল রাধিকা বৃষভানুত্মজা স্বয়ং। এই গোলোক ধামই গোকুল বৃন্দাবন ও বৈকুণ্ঠ ধামই দ্বারকা।
ভগবতী রাধিকা |
এই গোকুল বৃন্দাবনে পরিপূর্ণ তম দ্বিভুজ শ্রী কৃষ্ণ শ্রী রাধিকা মহালক্ষ্মী সহিত বিহার করেন ও দ্বারকা বৈকুণ্ঠে শ্রী চর্তুভুজ নারায়ণ শ্রী রুক্মিনী মহালক্ষ্মীর সহিত বিহার করেন। শ্রী ব্রজধামে নারদমুনি পরমব্রম্ম পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে দর্শন করে তিনি ভাবলেন ভগবানের নিত্য সঙ্গীনি ভগবতী মহালক্ষ্মীও বৃন্দাবনে কোনো এক গোপের গৃহে অবতীর্ণ হয়েছেন। যথা- অথাসৌ চিন্তয়ামাস মহাভাগবতযথা-
অথাসৌ চিন্তয়ামাস মহাভাগবতো মুনিঃ।
অস্য কান্তা ভগবতী লক্ষীনারয়নো হরৌ।।
বিধায় গোপিকারুপং ক্রীড়াথং শাঙ্গবরধনঃ।। অবশ্যমবতীর্ণা সা ভবিষ্যতি না সংশয়ঃ। এই চিন্তাকরে তিনি বৃন্দাবনের প্রতি গৃহে গৃহে খুজতে লাগলেন কোথায় সেই ভগবতী অবতীর্ণ হয়েছেন।। রাধে রাধে রাধে রাধে রাধে রাধে রাধে রাধে রাধে