অক্ষয় তৃতীয়া কি ও কেন অক্ষয় তৃতীয়া পালন করা হয়
এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। কারণ এটি "অবিরাম সমৃদ্ধির তৃতীয় দিন" নির্দেশ করে।হিন্দু ক্যালেন্ডার চন্দ্রসৌর কিন্তু বেশিরভাগ উৎসবের তারিখ ক্যালেন্ডারের চন্দ্র অংশ ব্যবহার করে নির্দিষ্ট করা হয়। একটি চান্দ্র দিন তিনটি ক্যালেন্ডার উপাদান দ্বারা স্বতন্ত্রভাবে চিহ্নিত করা হয়: মাস (চন্দ্র মাস), পক্ষ (চান্দ্র পাক্ষিক) এবং তিথি (চন্দ্র দিন)। অধিকন্তু, মাসা নির্দিষ্ট করার সময়, দুটি ঐতিহ্যের মধ্যে একটি প্রযোজ্য, যেমন। আমন্ত / পূর্নিমান্ত। যদি একটি উত্সব চাঁদের ক্ষয়প্রাপ্ত পর্যায়ে পড়ে,
অক্ষয় তৃতীয়ার ছবি |
তবে এই দুটি ঐতিহ্য একই চন্দ্র দিবসকে দুটি ভিন্ন (কিন্তু ধারাবাহিক) মাসায় পড়ে বলে চিহ্নিত করে। একটি চান্দ্র বছর একটি সৌর বছরের তুলনায় প্রায় এগারো দিন ছোট। ফলস্বরূপ, বেশিরভাগ হিন্দু উৎসব গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দিনে ঘটে।তখনি আমাদের লাভ হবে যখন কোন ভালো কাজ করা হয় আবার যদি অক্ষয় পূণ্য আর যদি খারাপ কাজ করা হয় তবে লাভ হয় অক্ষয় পাপ। তাই—
অক্ষয় তৃতীয়ার করণীয় ও বর্জনীয়ঃ
৹ যেহেতু প্রাণিহত্যা মহাপাপ তাই আমিষাহার পরিত্যাগ করা উচিত অন্যদের খাওয়া থেকে বিরত রাখুন।
৹ কৃষ্ণপ্রসাদ গ্রহণ করা উচিত।
৹ কৃষ্ণমন্দিরে দান করা উচিত ভোগ, চন্দন, ফুল, ফল, অর্থ ইত্যাদি ।
৹ প্রতিটি কাজ করা উচিত খুব সাবধানে করতে হয় অক্ষয় তিথিতে।
৹কটু কথা কখনো যেন না বেরোয় মুখ থেকে।
৹ অক্ষয় তিথিতে কোনো কারণে যেন কারো ক্ষতি না করে ফেলি বা কারো মনে আঘাত দিয়ে না ফেলি এটি মনে রাখা অবশ্যক ।
৹ তাই এদিন যথাসম্ভব কৃষ্ণকথা বলা উচিত।
৹ অপরের মনে আনন্দ দেয়ার মত কাজ করা উচিত তাই এদিন পূজা,জপ,ধ্যান,দান ইত্যাদি করা উচিত।
৹প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতে হয় সতর্কভাবে কারন এই তৃতীয়ার সব কাজ অক্ষয় থাকে তাই ।
যে সকল তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল এ দিনে—
১) বিষ্ণুর অবতার পরশুরাম আবির্ভূত হন।
২)গঙ্গা দেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন রাজা ভগীরথ ।
৩) গনেশ বেদব্যাসের মুখনিঃসৃত বাণী শুনে মহাভারত লিখতে শুরু করেন।
৪) চন্দনযাত্রা শুরু হয়।
৫) সত্যযুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়।
৬) কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাঁকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেন। এদিনই কুবেরের লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল বলে এদিন বৈভব-লক্ষ্মীর পূজা করা হয়।
৭) যখন ভক্তরাজ সুদামা শ্রী কৃষ্ণের সাথে দ্বারকায় গেলেন দেখা করতে তখন তাঁর থেকে সামান্য চালভাজা নিয়ে শ্রী কৃষ্ণ তাঁর সকল দুঃখ মোচন করেছিলন।
৮) দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে যান এবং ভগবান তার সখীকে রক্ষা করেন শ্রীকৃষ্ণ। শরণাগতের পরিত্রাতা রূপে এদিন শ্রী কৃষ্ণা দ্রৌপদীকে রক্ষা করেন।
৯) রথ নির্মাণ শুরু হয় পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ।
১০) গঙ্গোত্রী-যমুনত-কেদার-বদরী এইদিনেই তার দ্বার উদঘাটন হয় আর বকি সময় পুরীর মন্দির ছয়মাস বন্ধ থাকে।
এই বছরের কৃষ্ণভাবনায় অক্ষয়তৃতীয়া সবার ভালো কাটুক এই কামনায়-- হরেকৃষ্ণ(সীমা সরকার)