দীক্ষাগুরু নির্বাচন করবেন কিভাবে
প্রকৃত গুরু হতে হলে-গুরু কৃষ্ণরুপ হন শাস্ত্রের প্রমানে,গুরুরুপে কৃষ্ণ কৃপা করেন ভক্তগনে।।
✔️আমাদের ইন্দ্রিয়সমুহ অপুর্ণ তাই আমরা পরম সত্যকে জানতে পারি না। যেমন কোন বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে হলে আমরা সেবিষয়ের জ্ঞানীর নিকট হতে শিক্ষা লাভ করি। তেমনি পরমার্থজ্ঞান লাভ করতে হলে তত্ত্বদর্শী ব্যাক্তি বা পরমার্থতত্ত্ববেত্তা পুরুষের আশ্রয় গ্রহন করতে হয়। এবং এই তত্ত্বদ্রষ্টা পুরুষ হলেন গুরুদেব। এই গুরুদেবও একান্তভাবে আশ্রিত যথার্থ ও যোগ্য শিষ্যের মত কোন তত্ত্বদর্শী ব্যাক্তি বা গুরুদেবের কাছ থেকে এই জ্ঞান লাভকরেছেন। এবং পরবর্তীতে তিনি আবার এই কর্মসাধ্য পারমার্থিক জ্ঞান তার যোগ্য শিষ্যের মাঝে দান করেন।এইভাবে যথার্থ শিষ্য পরম্পরার মাধ্যমে আদিগুরু পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ থেকে এই জ্ঞান প্রবাহিত হয়েছে। এবং পরবর্ত্তীতে তা একাধিক ধারা বা গুরুপরম্পরা রুপ বা সম্প্রদায় সৃষ্ট হয়েছে।তাই শুদ্ধ পরম্পরা ধারা বা সম্প্রদায়ের সাথে যুক্ত না হলেজীবের পারমার্থিক জীবন, তার ইহলোক ও পরলোক দুটোই নষ্ট হয়।
দীক্ষাগুরু নির্বাচন |
✔️পদ্মপুরানে বলা হয়েছে,''সম্প্রদায়বিহীনা যে মন্ত্রান্তে নিষ্ফলা মতাঃ,অতঃকলৌ ভবিষ্যন্তি চত্বারঃ সম্প্রদায়িনঃ''।। অর্থাৎ যে ব্যাক্তি যথার্থ সম্প্রদায় বা গুরুপরম্পরা থেকে যুক্ত নয় সে যে মন্ত্রই জপ করুক না কেন, তা নিষ্ফল বলে বিবেচিত হয়।।শাস্ত্র ও তত্ত্ববিদ্গনের মতে চারটি শুদ্ধ পরম্পরায় ধারা বর্তমান আছে এর বাইরে বিভিন্ন সময়ে যত সম্প্রদায় সৃষ্ট হয়েছে তা সবই অসম্প্রদায়।
✔️শাস্ত্রে উল্লেখ আছে,''শ্রী ব্রহ্ম রুদ্র সনক বৈষ্ণব ক্ষিতিপাবন,চত্বারন্তে কলৌ ভব্য হি উৎকলে পুরুষোত্তম''।।পদ্মপুরান।।অর্থাৎ জগতের পবিত্রতা সম্পদানকারী শ্রী, ব্রহ্ম, রুদ্র ও সনক, এই কলিযুগে চারটি সম্প্রদায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ থেকে বা উৎকল দেশ পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীজগন্নাথ থেকে আবির্ভূত হবে।।
✔️এই চারটি সম্প্রদায়ে চারজন আচার্য্য দ্বারা কলিযুগে পারমার্থিক জ্ঞান প্রবাহিত হয়েছে।১। রামানুজাচার্য (শ্রী সম্প্রদায়)২। মধবাচার্য ( ব্রহ্ম সম্প্রদায়)৩। বিষ্ণুস্বামী ( রুদ্র সম্প্রদায়)৪। নিম্বাকাচার্য ( কুমার সম্প্রদায়)শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই চারটি সম্প্রদায় ছাড়া অন্যান্য নিজ মনগড়া অপসম্প্রদায়গুলিকে ত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।ভক্তিবিনোদ ঠাকুর সাবধানবানী দিয়েছেন,''আউল,বাউল,কর্তাভেজা, নেড়া, দরবেশ শাই,সখী, ভেকী, সহজিয়া, স্মার্ত, জাত-গোসাই,অতিবারী, চুড়াধারী, গৌরাঙ্গ-নাগরী,তোতা বলে এই তেরর সঙ্গ নাহী করি''।।উক্ত চার সম্প্রদায় পরম্পরা ধারায় আগত শিক্ষা প্রদান করাইগুরুপরম্পরার উদ্দেশ্য। অন্যথায় গুরুপরম্পরা কেবল একটি শারীরিক পরম্পরা বলে গন্য হবে। তাহলে সমাজে জাত-ব্রাহ্মন,জাত-গোসাই সহ অন্যান্য অপসম্প্রদায়গুলিতাদের গুরু-নামধারী ব্যবসা চালিয়ে যাবে যে, যাদের দেওয়া মন্ত্রেকোন ক্রিয়া হয় না।▪️তাই গুরু নির্বাচনের পুর্বে আমাদের অবশ্য কর্তব্য গুরুদেবের পরম্পরা বিষয়ে অনুসন্ধান করা।।হরেকৃষ্ণ।।