বিদ্যার দেবী সরস্বতী ও সরস্বতীর প্রণাম মন্ত্র এবং আবির্ভাব

দেবী সরস্বতী বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের  জ্ঞান, সঙ্গীত, শিল্পকলা, বুদ্ধি ও বিদ্যার  দেবী। তিনি সরস্বতী-লক্ষ্মী-পার্বতী এই ত্রিদেবীর অন্যতম হিসেবে আখ্যায়িত হয়ে থাকেন । এই ত্রিদেবীর তথা সরস্বতী-লক্ষ্মী-পার্বতী কাজ হল ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবকে যথাক্রমে জগৎ সৃষ্টি পালন করতে সাহায্য করা। 

সরস্বতীর গায়ের রং শুভ্র(সাদা)। শ্বেতপদ্ম তার আসন। তার এক হাতে পুস্তক ও এক হাতে বীণা। তার হাতে বীণা থাকায় তাকে বীণাপাণি বলা হয়। এছাড়াও তিনি শ্রুতদেবী নামেও কথিত হন।দেবনাগরী सरस्वती সংস্কৃত লিপ্যন্তর সরস্বতী অন্তর্ভুক্তি দেবী , ত্রিদেবী আবাস ব্রহ্মলোক/সত্যলোক মন্ত্র ওঁ শ্রী শ্রী সরস্বত্যৈ নমঃ গায়ত্রী মন্ত্র : ওঁ বাগদেব্যৈ বিদ্মহে ব্রহ্মরাজায় ধীমহি তন্নোঃ দেবী প্রচোদয়াৎ।। বাহন শ্বেত হংস। মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতীপূজা করা হয়। সরস্বতী দেবীর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ঋগ্বেদে। দেবীভাগবত পুরাণ অনুসারে তার এক অংশ ব্রহ্মার স্ত্রী।প্রাচীন যুগ বা  বৈদিক যুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত মা স্বরস্বতী সনাতনধর্মের একজন অতীব প্রয়োজনীয়  দেবী হিসাবে পূজিত হয়ে ও আখ্যায়িত হয়ে আসছেন। এই দিনে অনেক ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের হাতেখড়িও হয়ে থাকে।

সরস্বতীর পুজোর ছবি
সরস্বতীর পুজোর ছবি


সরস্বতী আবির্ভাব কিভাবে হল


ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অনুযায়ী গোলোকে শ্রীকৃষ্ণের কন্ঠদেশ থেকে দেবী সরস্বতী উদ্ভূতা হয়েছিলেন। চৈতন্য ভাগবত (আদিলীলা ২/৯-১৪) তে বর্ণনা করা হয়েছে-  পূর্বে ব্রহ্মা জন্মিলেন নাভিপদ্ধ হৈতে।  তথাপিও শক্তি নাই কিছুই দেখিতে।।  তবে যবে সর্ববারে লইলা শরণ,  তবে প্রভু কৃপায় দিলেন দরশন।  তবে কৃষ্ণ কৃপায় স্ফুরিত সরস্বতী।  তবে সে জানিলা সর্ব অবতার স্থিতি।।  

এক সময় শ্রীব্রহ্মা সৃষ্টিকার্যের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। শান্তভাবে ধ্যানস্থ আছেন। কী করবেন, কী করা উচিত চিন্তা করছেন। এমন সময় তাঁর শরীর থেকে এক সুন্দরী দেবীমূর্তি প্রকাশিত হয়। দেবী ব্রহ্মাজীকে বললেন, হে বিধাতা আমি আপনার থেকে প্রকাশিত হলাম। এখন দয়া করে আপনি আমার স্থান এবং কী কর্ম তা নির্দেশ করুন। ‘ব্রহ্মা বললেন “তোমার নাম সরস্বতী। তুমি অবস্থান করো সকলের জিহ্বাতে বিশেষভাবে সুশিক্ষিত ব্যক্তিদের জিহ্বাতে তুমি নৃত্য করো।পৃথিবীতে তুমি একটি নদীরূপে প্রকাশিত হও।প্রশ্ন করলেন স্বয়ংদেবী সরস্বতী - হে আমার প্রিয় সৃষ্টিকর্তা , আপনি কেনই বা বললেন, আমি সবারই জিহ্বাতে অবস্থান করবো; আবার বললেন, নদীরূপে থাকবো। এর আসল কারণ  কী?তখন  শ্রী শ্রী ব্রহ্ম দেবতা  বললেন-দেবী সরস্বতী তুমি যখন লোকের জিহ্বাতে স্বয়ং অবস্থান করবে,দেবী তখন লোকের জিহ্বা থেকে বাকশক্তি হয়ে থাকবে। তাই তোমার নাম হবে বাকদেবী স্বরস্বতী। তুমি আমার মুখ থেকেই প্রকাশিত। তুমি পবিত্রবতী। 

জগৎ-সংসারে বহু অপবিত্র মানসিকতা সম্পন্ন জীব থাকবে, অপবিত্র মানুষের জিহ্বায় কদর্য বাক্য স্ফুরিত হবে, সেসব জিহ্বাতে তুমি অবস্থান করে সুখি হতে পারবে না।সাক্ষাৎ বুদ্ধি স্বরূপিণী  হে সরস্বতী, তুমি।দেবী বলো,তুমি কোথায় আনন্দ লাভ করবে? সরস্বতী বললেন-যে সমস্ত ব্যক্তি পরম সুন্দর পরমেশ্বর ভগবানের আরাধনা করেন, তাদের জিহ্বায় সর্বদা পরম প্রভুর নাম কীর্তিত হবে। আমি তাঁদের পবিত্র জিহ্বায় অধিষ্ঠান করবো।   
Pavitra purane Saraswati পবিত্র পুরাণে সরস্বতী
বেদের যজ্ঞধাত্রী সরস্বতী পুরাণে ধরা দিয়েছেন বিচিত্র লীলাময়ী রূপে। অনেকগুলো পুরাণেই আমরা সরস্বতীর সাক্ষাৎ পাই। কিন্তু বৈদিককালের সরস্বতী মৌলিক ভাবনিচয় পুরাণের বর্ণনায় কোথাও ক্ষুণ্ণ হয়নি বরং হয়েছে অধিকতর সুপ্রকাশিত। দেবী ভাগবতে (৯/৭) বলেন, দেবী সরস্বতী আদ্যা প্রকৃতির অধিষ্ঠাত্রী দেবতা। তিনি বোধস্বরূপিণী, সমুদয় সংশয়ছেদনকারিণী এবং সর্বসিদ্ধি প্রদায়িণী। সঙ্গীতের সন্ধান ও তাল প্রভৃতির কারণ স্বরূপিণীও তিনিই।
সরস্বতীর সঠিক  প্রণাম মন্ত্র

সরস্বতী প্রণামমন্ত্র :

ওঁ জয় জয় দেবী চরাচরসারে। কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে। বীণারঞ্জিত পুস্তক হস্তে ভগবতী ভারতী দেবী নমস্তে ॥ ওঁ সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে।বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যাং দেহী নমোহস্তুতে ॥

এই ওয়েবসাইটটিতে  আরও জানতে পারবেন
দেবী সরস্বতী,
সরস্বতী,
সরস্বতী পূজা,
সরস্বতী দেবী,
মা সরস্বতী,
দেবী সরস্বতী আসলে কে?,
সরস্বতী দেবীর মন্ত্র,
সরস্বতী প্রণাম মন্ত্র,
সরস্বতী মন্ত্র,
লক্ষ্মী ও সরস্বতী দেবী দুর্গার কন্যা,
জয় দেবী সরস্বতী,
ব্রহ্মা ও সরস্বতী,
দেবী সরস্বতী আসলে কে,
দেবী সরস্বতী স্বামী কে,
জয় দেবী সরস্বতী সারদা,
দেবী সরস্বতীর ১০৮ নাম,
সরস্বতী পুজো,
সরস্বতী কি শুধু বিদ্যার দেবী,
দেবী সরস্বতী কখন বাণীতে থাকেন,
লক্ষী ও সরস্বতী দেবী দূর্গার কন্যা নয়,
বিদ্যার দেবী সরস্বতী তৈরি a to z.


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url