ষটতিলা একাদশী
মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের ‘ষতিলা’ একাদশীর মাহাত্ম্য ভবিষ্যোত্তরপুরাণে বর্ণিত আছে।যুধিষ্ঠির মহারাজ বললেন – হে জগন্নাথ! মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের ফল, একাদশী তিথির নাম কি, বিধিই বা কি এবং তার কি সবিস্তারে বর্ণনা করুন।
তদুত্তরে ভগবান বললেন – হে রাজন! এই একাদশী ‘ষট্তিলা’ নামে জগতে বিদিত।একসময় দাভ্য ঋষি মুনিশ্রেষ্ঠ পুলস্তকে জিজ্ঞাসা করেন – মর্ত্যলোকে মানুষেরা ব্রহ্মহত্যা, গোহত্যা, অন্যের সম্পদ হরণ আদি পাপকর্ম দ্বারা নরকে গমন করে। যাতে তারা নরক গতি থেকে রক্ষা পায়, তা যথাযথভাবে আমাকে উপদেশ করুন। অনায়াসে সাধন করা যায়। এমন কোন কাজের মাধ্যমে যদি তাদের এই পাপ থেকে উদ্ধারের কোন উপায় থাকে, তবে তা বলুন।
ঋষি পুলস্ত্য বললেন, হে মহাভাগ! তুমি একটি গোপনীয় উত্তম বিষয়ের প্রশ্ন করেছ। মাঘ মাসে শুচি, জিতেন্দ্রিয়, কাম, ক্রোধ আদি শূন্য হয়ে স্নানের পর সর্বদেবেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের পূজা করবে। পূজাতে কোন বিঘ্ন ঘটলে কৃষ্ণনাম স্মরণ করবে। রাত্রিতে অর্চনান্তে হোম করবে। তারপর চন্দন, অগুরু, কর্পূর ও শর্করা প্রভৃতি দ্বারা নৈবেদ্য প্রস্তুত করে ভগবানকে নিবেদন করবে। কুষ্মাণ্ড, নারকেল অথবা একশত গুবাক দিয়ে অর্ঘ্য প্রদান করবে ‘কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃপালুস্ত্বমগতীনাং গতিৰ্ভব' ইত্যাদি মন্ত্রে শ্রীকৃষ্ণের পূজা করতে হয়। ‘কৃষ্ণ আমার প্রতি প্ৰীত হোন' বলে যথাশক্তি ব্রাহ্মণকে জলপূর্ণ কলস, ছত্র, বস্ত্র, পাদুকা, গাভী ও তিলপাত্র দান করবে। স্নান, দানাদি কার্যে কালো তিল অত্যন্ত শুভ৷
ষট্তিলা একাদশী |
হে দ্বিজত্তম! ঐ প্রদত্ত তিল থেকে পুনরায় যে তিল উৎপন্ন হয়, ততো বছর ধরে দানকারী স্বর্গলোকে বাস করে। তিলদ্বারা স্নান, তিল শরীরে ধারণ, , তিল জলে মিশিয়ে তা দিয়ে তর্পণ, তিল ভোজন এবং তিল দান—এই ছয় প্রকার বিধানে সর্বপাপ বিনষ্ট হয়ে থাকে। এই জন্য এই একাদশীর নাম ষট্তিলা।হে যুধিষ্ঠির!একদা অর্থাৎ একসময় নারদমুনি ও এই (ষট্তিলা)একাদশীর ফল ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাইলে যে কাহিনী আমি বলেছিলাম তা এখন তোমার কাছে বর্ণনা করছি।
পুরাকালে মর্ত্যলোকে এক ব্রাহ্মণী বাস করত। সে প্রত্যহ ব্রত আচরণ ও দেবপূজাপরায়ণা ছিল। উপবাস ক্রমে তার শরীর অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে গিয়েছিল। সেই মহাসতী ব্রাহ্মণী অন্যের কাছ থেকে দ্রব্যাদি(খাদ্যদ্রব, বস্র ইত্যাদি) গ্রহণ করে ব্রাহ্মণ, দেবতা, কুমারীদের ভক্তিভরে দান করত। কিন্তু কখনও ভিক্ষুককে ভিক্ষাদান ও ব্রাহ্মণকে অন্নদান করেনি। এইভাবে বহু বছর অতিক্রান্ত হল। আমি চিন্তা করলাম, কষ্টসাধ্য বিভিন্ন ব্রত করার ফলে এই ব্রাহ্মণীর শরীরটি শুকিয়ে যাচ্ছে। সে যথাযথভাবে বৈষ্ণবদের অর্চনও করেছে, কিন্তু তাদের পরিতৃপ্তির জন্য কখনও অন্ন দান করেনি। তাই আমি একদিন কাপালিক রূপ ধারণ করে তামার পাত্র হাতে নিয়ে তার কাছে গিয়ে ভিক্ষা প্রার্থনা করলাম।ব্রাহ্মণী বলল – হে ব্রাহ্মণ! তুমি কোথা থেকে এসেছ, কোথায় যাবে, তা আমাকে বলো।আমি বললাম – হে অপরুপা ! আমাকে দান(ভিক্ষা) দাও। তখন সে ক্রুদ্ধ হয়ে আমার পাত্রে একটি মাটির ঢেলা নিক্ষেপ করল। তারপর আমি সেখান থেকে চলে গেলাম।
বহুকাল পরে সেই ব্রাহ্মণী ব্রতপ্রভাবে স্বশরীরে স্বর্গে গমন করল। মাটির ঢেলা দানের ফলে একটি মনোরম গৃহ সে প্রাপ্ত হল। কিন্তু হে নারদ! সেখানে কোন ধান ও চাল কিছুই ছিল না। গৃহশূন্য দেখে মহাক্রোধে সে আমার কাছে এসে বলল – আমি ব্রত, কৃচ্ছ্রসাধন ও উপবাসের মাধ্যমে।
মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের ‘ষতিলা’ একাদশীর মাহাত্ম্য ভবিষ্যোত্তরপুরাণে বর্ণিত আছে।
যুধিষ্ঠির মহারাজ বললেন – হে জগন্নাথ! মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের ফল, একাদশী তিথির নাম কি, বিধিই বা কি এবং তার কি সবিস্তারে বর্ণনা করুন।
তদুত্তরে ভগবান বললেন – হে রাজন! এই একাদশী ‘ষট্তিলা’ নামে জগতে বিদিত।
একসময় দাভ্য ঋষি মুনিশ্রেষ্ঠ পুলস্তকে জিজ্ঞাসা করেন – মর্ত্যলোকে মানুষেরা ব্রহ্মহত্যা, গোহত্যা, অন্যের সম্পদ হরণ আদি পাপকর্ম দ্বারা নরকে গমন করে। যাতে তারা নরক গতি থেকে রক্ষা পায়, তা যথাযথভাবে আমাকে উপদেশ করুন। অনায়াসে সাধন করা যায়। এমন কোন কাজের মাধ্যমে যদি তাদের এই পাপ থেকে উদ্ধারের কোন উপায় থাকে, তবে তা বলুন।
ঋষি পুলস্ত্য বললেন, হে মহাভাগ! তুমি একটি গোপনীয় উত্তম বিষয়ের প্রশ্ন করেছ। মাঘ মাসে শুচি, জিতেন্দ্রিয়, কাম, ক্রোধ আদি শূন্য হয়ে স্নানের পর সর্বদেবেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের পূজা করবে। পূজাতে কোন বিঘ্ন ঘটলে কৃষ্ণনাম স্মরণ করবে। রাত্রিতে অর্চনান্তে হোম করবে। তারপর চন্দন, অগুরু, কর্পূর ও শর্করা প্রভৃতি দ্বারা নৈবেদ্য প্রস্তুত করে ভগবানকে নিবেদন করবে। কুষ্মাণ্ড, নারকেল অথবা একশত গুবাক দিয়ে অর্ঘ্য প্রদান করবে ‘কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃপালুস্ত্বমগতীনাং গতিৰ্ভব' ইত্যাদি মন্ত্রে শ্রীকৃষ্ণের পূজা করতে হয়। ‘কৃষ্ণ আমার প্রতি প্ৰীত হোন' বলে যথাশক্তি ব্রাহ্মণকে জলপূর্ণ কলস, ছত্র, বস্ত্র, পাদুকা, গাভী ও তিলপাত্র দান করবে। স্নান, দানাদি কার্যে কালো তিল অত্যন্ত শুভ৷