দীক্ষা কি ও দীক্ষা গ্ৰহণের প্রয়োজন কেন
দীক্ষা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কৃপা লাভের উদ্দেশ্যে মানুষ দীক্ষা গ্রহণ করে থাকে।দীক্ষা মানব জীবনে মুক্তির জন্য অতীবগুরুপ্তপুর্ন একটি অধ্যায়।তাই আমাদের সকলের উচিত খুব মনোযোগ ও শ্রদ্ধার সহি জীবনের এই অধ্যায়কে অতিক্রম করা।
-গুরু ব্রহ্মা গুরু বিষ্ণু গুরুদেব মহেশ্বর।🙏
'গুরু 'রেব :পরং 'ব্রহ্ম তস্মৈ 'শ্রী গুরুবে নমঃ🙏
-নমষ্কার আমরা যে গুরুদেবের কাছে দীক্ষা নেই তার কি প্রয়োজন আমাদের জীবন সেই নিয়ে আলোচনা করব আজ---😊
-শাস্রে বলে–যে কার্যে পাপক্ষয় করে অন্ধকারাচ্ছন্ন হৃদয়ে দিব্য জ্ঞানের আলো প্রজ্জ্বলিত (প্রকাশ) করে শ্রীভগবানের রূপ প্রাপ্তির সক্ষম করায় এবং সঞ্চিত পাপ রাশি বিনাশ করায়, তাহাই দীক্ষা।স্বকর্ণে শ্রীগুরুদেব কর্তৃক ইষ্টমন্ত্র দানের নাম দীক্ষা।শ্রীগুরুর নিকট হতে যথাবিধি মন্ত্রোপদেশ গ্ৰহণ করার নামই দীক্ষা।🥰
দীক্ষা গ্রহণের ছবি |
দীয়ন্তে জ্ঞানমত্যন্তং ক্ষীয়তে পাপসঞ্চয়ঃ।
তস্মাদ্ দীক্ষেতি সা প্রোক্তা মুনির্ভিস্তত্ত্ বদর্শিভিঃ।।
দিব্যজ্ঞানং যতো দদ্যাৎ কৃত্যা পাপস্য সংক্ষয়ম্।
তস্মাদীক্ষেতি সা প্রোক্তা মুনির্ভিস্তত্ত্ববেদিভিঃ।।
(রুদ্রযামল ও যোগিনী তন্ত্রে)
অনুবাদঃ- যে কার্য পাপক্ষয় করিয়া দিব্য জ্ঞান প্রকাশ করে, তাহাই দীক্ষা। প্রকৃতপক্ষে দীক্ষার অর্থ বর্ণ বা শব্দ বিশেষ, শ্রবণ করা নহে। বর্ণ বা বর্ণগুলি শব্দব্রহ্ম বা নাদব্রহ্ম বলিয়া পরিকীর্তিত আছে। সেই শব্দব্রহ্ম বা নাদব্রহ্মই বর্ণ। সেই বর্ণই ভগবানের নাম। নাম এবং নামী অভেদ, কিছুই প্রভেদ নাই। এই ভাবে যেই নাম বা মন্ত্র গ্রহণ করা হয় তাহাই দীক্ষা। ☺️
যিনি নামে এবং মন্ত্র এ মন্ত্রের অভীষ্ট দেবতাকে এক ভাবেন, তিনি প্রকৃত দীক্ষিত। দীক্ষামন্ত্র গ্রহণ করিলে শব্দব্রহ্ম বা নাদব্রহ্ম অভীষ্ট দেবতার না হয় এবং হৃদয়ে নিজ ইষ্ট দেবতার ভাব উদ্দীপন না হয়, তবে সেই রূপে মন্ত্র বা দীক্ষা গ্রহণ করিয়া দীক্ষা বা মন্ত্র গ্রহণ শব্দ প্রয়োগ না করাই শ্রেয়ঃ। 🙂
মানবজীবনে দীক্ষার প্রয়োজনীয়তা কি?
দৃঢ় বিশ্বাস বা ভক্তিই মূল।দীক্ষা গ্ৰহণের প্রয়োজনীয়তা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কৃপা লাভের জন্যই দীক্ষা(মন্ত্র) গ্ৰহণের প্রয়োজন। বিধিমত দীক্ষা গ্ৰহণ না করলে সাধন ভজন রাজ্যে প্রবেশ করা যায় না। দীক্ষা ব্যতিত গুরুর কৃপা হয় না। 😐
দীক্ষা ছাড়া শ্রী কৃষ্ণের কৃপা, সেবা ও অর্চনাদি ভজনাঙ্গের অধিকার হয় না এবং পরমাত্মার সাথে জীবাত্মার মিলন বা সংযোগের উপায় থাকে না।সংসার বাসনা ক্ষয়,জন্ম-মৃত্যু বারণ এবং সৎকার্যের সিদ্ধি হয় না। যেমন–ধ্রুব দীক্ষা ছাড়া সাধন শুরু করেন কিন্তু কৃপা পাননি। শেষে নারদের নিকট হতে দীক্ষা পেয়ে কৃপা পান।
-
অদীক্ষিতাং লোকানাং দোষং শৃনু বরাননে।
অন্নং বিষ্ঠা সমং তস্য জলং মূত্র সমং স্মৃতম্।
যৎ কৃতৎ তস্য শ্রাদ্ধং সর্বং যাতিহ্যধোগতিম্।।১
(তথাহি মৎস্যর্সূক্তে)
অনুবাদঃ- র্অদীক্ষিত ব্যক্তি অন্ন বিষ্ঠার সমান, জল মূত্রতুল্য। তাহারা শ্রাদ্ধাদি কার্য যাহা কিছু করে,তাহা সমস্তই বৃথা।
-
ন দীক্ষিতস্য কার্যং স্যাৎ তপোভির্নিয়মব্রতৈ।
ন তীর্থ গমনে নাপি চ শরীর যন্ত্রণৈঃ।।২
অদীক্ষিতা যো কুর্বন্তি তপো জপ পূজাদিকাঃ।
ন ভবতি ক্রিয়া তেষাং শিলায়ামুপ্ত বীজবৎ।।৩
-
অনুবাদঃ- দীক্ষা গ্রহণ না করিলে কোন কার্য করিবার অধিকার জন্মে না। সেই জন্য জপ, তপ, নিয়ম, ব্রত, তীর্থ,ভ্রমণ উপবাসাদি শারীরিক কষ্ট দ্বারা কোন ফল দর্শিবে না।
-
অদীক্ষিতোহপি মরণে রৌরবং নরকং ব্রজেৎ।
অদীক্ষিতস্য মরণে পিশাচত্বং ন মুঞ্চতি।।
অনুবাদঃ- অদীক্ষিত ব্যক্তিগণ মৃত যদি হয়।
রৌরব নরকে বাস জানিবে নিশ্চয়।।
স্কন্ধ পুরাণেতে তার আছয়ে বর্ণন।
মৃত্যু পরে হবে তার পিশাচে জনম।।
-
দীক্ষা, মূলং' জপং' সর্বং 'দীক্ষা' মূলং 'পরং: তপঃ।
দীক্ষামাশ্রিত্য নিবসেৎ কৃত্রশ্রমে বসদ্।।
-
অনুবাদঃ-
জপ, তপ, তন্ত্র, মন্ত্র, দীক্ষা মূল হয়।
দীক্ষা ভিন্ন সর্বকার্য হইবেক ক্ষয়।।