কুর্ম-নাড়ী একমাত্র উপায় যা দিয়ে আপনি নিজের অভিজ্ঞতা কে বাড়াতে পারেন।
তা হল
আপনার উপলব্ধির ক্ষমতাকে বাড়ানো। যদি এখন আপনার চোখ যেটা দেখতে পারছে না আর সেটা
যদি দেখতে পান তাহলে আপনার অনুভব বেড়ে যাবে।এভাবেই আপনার উপলব্ধি যদি বৃদ্ধি পায়
কেবল তখনই আপনার অভিজ্ঞতাও বৃদ্ধি পাবে। কুর্ম-নাড়ী কি? শ্বাস-প্রশ্বাস বা নিশ্বাস
কে বলা হয় কুর্ম-নাড়ী।এটাকে যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করেন তাহলে তাহলে আপনি এক উভয়চর
প্রাণীর মত হয়ে উঠতে পারেন।তখন আপনি শরীরের মধ্যেই রইলেন আবার কিছুটা বাইরে
গেলেন।এই নিঃশ্বাস বা এই নিঃশ্বাসকে যে চালনা করে যোগতন্ত্রে তাকে আমরা বলি
কুর্ম-নাড়ী।কুর্ম অর্থ হলো কচ্ছপ বা কাসিম।কচ্ছপ বা কাসিম হলো উভয়চর প্রাণী।
যেটা
কিনা জলে থাকে আবার বাইরে বের হয়ে আসতে পারে।আপনি এক উভয়চর প্রাণী হয়ে উঠতে পারেন
যদি কুর্মনাড়ীকে আয়ত্ত্ব করতে পারেন।শরীরের মধ্যেই রয়েছেন কিন্তু এই ভৌত পৃথিবীর
একটু বাইরে যেতে পারবেন কারণ এটাই আপনার বাসনা। আপনি আপনার ভৌত অস্তিত্বকে
সম্পূর্ণরূপে ছাড়তে চান না আপনি চান ভৌতর মধ্যে স্থিত থেকে কিন্তু এর উদ্দে যা
রয়েছে তারও স্বাদ পেতে চান।আর এটাই সব সময় মানুষের বাসনা।
আপনি যা কিছু করছেন
এটাকে ভালো করে দেখুন আপন,আপনি বাইরে গিয়ে বিশ্বজয় করছেন বা বিয়ে করছেন বা
সন্তান ধারণ করছেন বা এটা সেটা করছেন বা মদ খাচ্ছেন বা মন্দির যাচ্ছেন যাই করেন না
আপনি, আদতে আপনি যা খুঁজছেন তা হল জীবনের এক বৃহত্তর অভিজ্ঞতা। একমাত্র উপায় যা
দিয়ে আপনি জীবনের এই অভিজ্ঞতাকে বাড়াতে পারেন তা হলো আপনার উপলব্ধির ক্ষমতাকে
বাড়িয়ে তুলে।যদি এখন আপনার চোখ যা দেখতে পারছে না সেটা যদি দেখতে পান আপনার অনুভব
বেড়ে যাবে।
 |
kurmo nari picture |
আপনার কান এখন যেটা শুনতে পায়না সেরকম যদি কিছু শুনতে পায় তাহলে আপনার অনুভব
বেড়ে যাবে। এই ভাবেই আপনার উপলব্ধি যদি বৃদ্ধি পায় কেবল তখনই আপনার অভিজ্ঞতাও
বৃদ্ধি পাবে। না হলে আপনি আপনার সংগ্রহ করা সীমিত তথ্যগুলোকে নিয়েই কল্পনা করতে
থাকবেন। বৃদ্ধি পাওয়ার একমাত্র উপায় হল নিজেকে প্রসারিত করা কিংবা বেরিয়ে
আসা।কুর্ম নাড়ী এ নিশ্বাস কে বলা হয় কুর্ম নাড়ী।এটা একটা দড়ির মতো।
ধরা যাক আপনার
নিঃশ্বাস টা কে নিয়ে নেওয়া হলো যদি আপনার শ্বাসকে নিয়ে নেওয়া হয় তখন কি হবে?
আপনি ও আপনার শরীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।এই মুহূর্তে আপনার অভিজ্ঞতায় আপনার শরীরটাই
হলো আপনি যা খাবার খেয়েছেন সেটাই।আপনি কি বুঝতে পারছেন এটা(শরীরের জন্য খাবার)
আপনার শরীরের জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে। আপনি যেটা সংগ্রহ করছেন সেটা আপনার হতে পারে
কিন্তু সেটা কখনোই আপনি হতে পারেন না। আমরা বলতে পারি এটা আমার,ওটা আমার,সেটা
আমার,এইটা আমার কিন্তু যদি বলি এটা আমি,ওটা আমি,সেটা আমি তখন মানুষ বলবে তার মাথা
গেছে অর্থাৎ সে একটা পাগল। তাই আপনি যা কিছু সংগ্রহ করেন সেটা আপনার হতে পারে
কিন্তু কখনোই আপনি হতে পারেন না।
যদি আপনার শ্বাস কে টেনে বের করে নেওয়া হয় তাহলে
আপনি আর আপনি যেটাকে সংগ্রহ করেছেন এ-দুটো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। মানে আপনি আর আপনার
শরীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।আপনার নিঃশ্বাস বা কুর্ম-নাড়ী সেই জিনিস যেটা আপনার কেউ
আপনার শরীরকে বেঁধে রাখে।যখন কুর্ম-নাড়ীর কথা বলছি তখন কেবল বাতাসের যাওয়া আসার
কথা বলছিনা। এখন আপনি আপনার নিঃশ্বাস কে অনুভব করতে সক্ষম নন মানে "দেখুন এই
মুহুর্তে আপনি যদি আপনার নিঃশ্বাস কে লক্ষ্য করেন আপনি ভাববেন দেখছেন না কেবল সেই
অনুভূতি গুলোকেই দেখছেন যেগুলো নিঃশ্বাস নেওয়ার ও ছাড়ার ফলে ঘটছে।"নিঃশ্বাস কে
জানার মতন ক্ষমতা আপনার নেই।নিঃশ্বাস বা এই ধরন টিকে যে তৈরি করেছে অথবা এই শক্তিকে
যে চালনা করছে সেটাকে আমরা বলছি কুর্মনাড়ী।
সেটার উপর যদি আমাদের কিছু আয়ত্ব থাকে
তখন আমরা উভয়চর প্রাণীর মত হয়ে উঠতে পারব। মানে আপনি ভৌতপ্রকৃতির মধ্যে স্থিত
কিন্তু বাইরেও বের হতে পারবেন।মানুষের জীবনে যদি এটুকু স্বাধীনতা চলে আসে তখন হঠাৎই
আপনি জানতে পারবেন ভৌত প্রকৃতির উপরে কিছুটা রয়েছে। এই ভৌত খোলসের ভেতরে আপনি যা
কিছু অনুভব করছেন সেটাই সব কিছু নয়। জীবনের এক সম্পূর্ণ আলাদা মাত্রা কে আপনি
জানবেন।যদি এটা কি আপনি জানেন এক মুহূর্তের জন্য তবে ভৌত প্রকৃতির ঊর্ধ্বে মৃত্যু
কোন সমস্যাই না।মৃত্যু একটা বড় সমস্যা কারণ এই শরীরের বাহিরের সম্পর্কে আপনি কিছুই
জানেন না।মানুষের কাছ থেকে যখন মৃত্যু কেড়ে নেওয়ার ভয় দেখানো হয় তখন মানুষের
মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। কেবল এই জন্যই যে, আপনি যা কিছু জানেন সেটা চলে যাচ্ছে।যদি
আপনি মৃত্যু ছাড়া অন্য কিছু জানতেন তবে এটা বড় ধরনের সমস্যা/আতঙ্ক হতো না।মৃত্যু
কোন বড় সমস্যা নয় কারণ আমরা মরণশীল।