গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কিছু মূল্যবান উক্তি
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বলা কিছু মূল্যবান উপদেশ
গীতায় কী উপদেশ দিয়েছেন শ্রীকৃষ্ণ,তিনি বলেছেন যে পুরুষের বুদ্ধিতে গুণ ও দোষ অতীত, সে বালকের সমান নিষিদ্ধ কর্ম থেকে নিবৃত্ত হয়ে পড়ে, কিন্তু দোষ বুদ্ধি থেকে হয় না। সে বিহিত কর্মের অনুষ্ঠান করে, তবে গুণবুদ্ধির সহায্য নয়।এই জগতে যা কিছু মন দিয়ে ভাবা যায়, মুখ দিয়ে বলা যায়, চোখ দিয়ে দেখা যায়, শ্রবণ করা যায় ও ইন্দ্রিয়ের দ্বারা অনুভব করা যায়, সে সবের নাশ সম্ভব।স্বপ্নের মতোই মনের বিলাস। তাই এটি শুধু মায়া, মিথ্যা।পবিত্র গীতার বাণী ভগবৎ গীতায় আছে -ধ্যান করলে মানুষের উপকার হয়। নিরলস সাধনায় মানুষের অন্তরে শান্তি যোগায়। ইচ্ছাশক্তি বাড়ায়,জীবনের লক্ষ্যের প্রতি একাগ্রতা আনে। আমরা খালি হাতে এসেছি আর খালি হাতেই যেতে হবে ! নিরালম্ব মনুষ্য জন্ম। দিগম্বর অবস্থায় জন্ম নেয় শিশু। আক্ষরিক অর্থেই খালি হাতে। কিন্তু কোনও একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে প্রতিটা মানুষ পৃথিবীতে এসেছে।
গীতার বাণী বাংলা অর্থসহ- অনন্য চেতাঃ সততম্ যঃ মাম্ স্মরতি নিত্যশঃ । তস্য অহম্ সুলভঃ পার্থ নিত্যযুক্তস্য যোগিনঃ ।।১৪ অর্থ-যিনি একগ্র চিত্তে কেবল আমাকেই নিরন্তর স্মরন করেন, আমি সেই নিত্তযুক্ত ভক্ত যোগিদের কাছে সুলভ হই। আব্রহ্ম ভূবনাত্ লোকাঃ পুনঃ আবর্তিনঃ অর্জুন । মাম উপেত্য তু কৌন্তেয় পুনর্জন্ম বিদ্যতে ।।১৬ অর্থ-হে অর্জুন ভূবন থেকে ব্রহ্মলোক পর্য্যন্ত সমস্ত লোকই পুনরাবর্তনশীল কিন্তু হে কৌন্তেয়, আমাকে লাভ করলে তার আর জন্ম হয় না। অব্যক্ত অক্ষরঃ ইতি উক্তঃ তম আহুঃ পরমাম্ গতিম্ । যম্ প্রাপ্য ন নিবর্তন্তে তদ্ধাম্ পরমম্ মম্ ।।২১ অর্থ-সেই অব্যক্তকে অক্ষর বলে; তাই সমস্ত জীবের পরমা গতি। কেউ যখন সেখানে যায় তখন আর তাকে এই জগতে ফিরে আসতে হয় না। সেইটিই হচ্ছে আমার পরম ধাম। শুক্ল কৃষ্ণে গতী হি এতে জগতঃ শাশ্বতে মতে ।
একয়া যাতি অনাবৃত্তিম্ অন্যয়া আবর্ততে পুনঃ ।।২৬ অর্থ-বৈদিক মতে দুইটি মার্গ রয়েছে। একটি শুক্লএবং অপরটি কৃষ্ণ। শুক্ল মার্গে দেহ ত্যাগ করলে তাকে আর এই জগতে ফিরে আসতে হয় না,কিন্তু কৃষ্ণমার্গে দেহ ত্যাগ করলে,এই জড় জগতে আবার ফিরে আসতে হয়। অন্তবত্ তু ফলম্ তেষাম্ তত্ ভবতী অল্পমেধষাম । দেবান দেবযজঃ যান্তি মত্ ভক্তাঃ যান্তি মাম্ অপি ।।২৩ অর্থ-অল্পবুদ্ধি ব্যক্তিদের আরাধনার ফল লব্ধ অস্থাই। দেবতাদের উপসকেরা তাদের আরাধ্য দেবতাদের লোক প্রাপ্ত হন, কিন্তু আমার ভক্তরা আমা পরম ধাম প্রাপ্ত হন।
গীতা সম্পর্কে একাধিক চমকপ্রদ তথ্য রয়েছে
বেদের সারমর্মকে বেদান্ত বা উপনিষদ বলা হয়। উপনিষদের সার রয়েছে গীতার মধ্যে। গীতা সম্পর্কে একাধিক চমকপ্রদ তথ্য রয়েছে—
১. কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনকে গীতার জ্ঞান দিয়েছিলেন কৃষ্ণ। এটি শ্রীকৃষ্ণ-অর্জুন সংবাদ নামে বিখ্যাত।
২. গীতা কৃষ্ণ ও অর্জুনের কথোপকথন। কিন্তু কৃষ্ণের মাধ্যমে বিশ্বকে গীতার জ্ঞান দিয়েছিলেন পরমেশ্বর। কৃষ্ণ সে সময় যোগারূঢ় ছিলেন।
৩. গীতার চতুর্থ অধ্যায় কৃষ্ণ জানান, পূর্বে এই যোগ তিনি বিবস্বানকে জানিয়েছিলেন। বিবস্বান মনুকে জানান। মনু ইক্ষ্বাকুকে বলেন। এ ভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পরম্পরাগত ভাবে এই জ্ঞান অর্জন করে আসছেন রাজর্ষিরা। কিন্তু কালান্তরে এই যোগ লুপ্ত হয়ে গিয়েছে। সেই পুরনো যোগই অর্জুনকে পুনরায় জানাচ্ছেন। পরম্পরাগত ভাবে সবার আগে বিবস্বান (সূর্য) এই জ্ঞান পেয়েছিলেন। তাঁর পুত্র ছিলেন বৈবস্বত মনু।
৪. কৃষ্ণের গুরু ছিলেন ঘোর অঙ্গিরস। ঘোর অঙ্গিরস কৃষ্ণকে যে উপদেশ দিয়েছিলেন, সেই একই উপদেশ অর্জুনকে দেন কৃষ্ণ। ছান্দোগ্য উপনিষদে উল্লেখ পাওয়া যায় যে, কৃষ্ণ ঘোর অঙ্গিরসের শিষ্য ছিলেন। তার কাছ থেকে কৃষ্ণ এমন জ্ঞান অর্জন করেন, যার পর অন্য কিছু জ্ঞাতব্য থাকে না। দ্বাপর যুগে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনকে গীতার জ্ঞান দিলেও, এর প্রাসঙ্গিকতা এখনও বর্তমান।
৫. গীতায় ভক্তি, জ্ঞান ও কর্মের পথের আলোচনা করা হয়েছে। তাত যম-নিয়ম ও ধর্ম-কর্মের বিষয় জানানো রয়েছে। গীতা মতে ব্রহ্ম (ঈশ্বর) একটি। বার বার গীতা পড়লে এর জ্ঞানের রহস্য উন্মোচিত হবে। গীতার মাধ্যমে সৃষ্টি উৎপত্তি, জীব বিকাসক্রম, হিন্দু সন্দেবাহক ক্রম, মানব উৎপত্তি, যোগ, ধর্ম, কর্ম, ঈশ্বর, ভগবান, দেবী, দেবতা, উপাসনা, প্রার্থনা, যম, নিয়ম, রাজনীতি, যুদ্ধ, মোক্ষ, অন্তরিক্ষ, আকাশ, পৃথিবী, সংস্কার, বংশ, কুল, নীতি, অর্থ, পূর্বজন্ম, জীবনযাপন, রাষ্ট্র নির্মাণ, আত্মা, কর্মসিদ্ধান্ত, ত্রিগুণ সংকল্পনা, সমস্ত প্রাণীদের মধ্যে মৈত্রী ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা যায়।
৬.গীতা যোগশ্বর কৃষ্ণের বাণী। এর প্রতিটি শ্লোকে জ্ঞানের প্রকাশ রয়েছে। যা প্রস্ফুটিত হলেই অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর হয়। জ্ঞান, ভক্তি, কর্ম যোগ মার্গের বিস্তৃত ব্যাখ্যা পাওয়া যায় এখানে। এই পথে চললে ব্যক্তি নিশ্চিত ভাবেই পরমপদের অধিকারী হতে পারবে।
৭.৭.৩১১২ খ্রীষ্টপূর্বে কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। কলিযুগ শুরু হয়েছিল শক সম্বৎ ৩১৭৭ বছর আগের চৈত্র শুক্লের প্রতিপদায়। আর্যভট্টের মতে, ৩১৩৭ খ্রীষ্টপূর্বে মহাভারতের যুদ্ধ হয়েছিল। এই যুদ্ধের ৩৫ বছর পর দেহত্যাগ করেন কৃষ্ণ। তখন থেকেই কলিযুগের সূচনা মনে করা হয়। মৃত্যুকালে কৃষ্ণের বয়স ছিল ১১৯ বছর। আর্যভট্টের গণনা অনুযায়ী ৫১৫৪ বছর আগে অর্জুনকে গীতার জ্ঞান দিয়েছিলেন কৃষ্ণ।
৮.হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে যখন এই জ্ঞান দেওয়া হয়েছিল, তখন একাদশী তিথি ছিল। দিনটি ছিল সম্ভবত রবিবার। প্রায় ৪৫ মিনিট পর্যন্ত এই জ্ঞান দিয়েছিলেন তিনি। গীতায় কৃষ্ণ ৫৭৪, অর্জুন ৮৫, সঞ্জয় ৪০ ও ধৃতরাষ্ট্র ১টি শ্লোক বলেছিলেন।
৯.উপনিষদে গীতার গণনা করা হয়। তাই একে গীতোপনিষদও বলা হয়। এটি মহাভারতের ভীষ্ম পর্বের অংশ। মহাভারতের কিছু স্থানে হরিগীতা নামে এর উল্লেখ পাওয়া যায়
১০. অর্জুন যখন কর্তব্য বিমুখ হয়ে সন্যাসী ও বৈরাগীর মতো আচরণ করে যুদ্ধ ত্যাগ করতে উদগ্রীব হয়ে পড়েন, তখন তাঁকে গীতার জ্ঞান দেন কৃষ্ণ। অর্জুন ছাড়া সঞ্জয় গীতার জ্ঞান শোনেন এবং ধৃতরাষ্ট্রকে শোনান।
১১. গীতা এমন একটি গ্রন্থ, যার অনুবাদ, ব্যাখ্যা, টিপ্পণী, গবেষণাপত্র নানান ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। আদি শঙ্করাচার্য, রামানুজ, রামানুজাচার্য, মধ্বাচার্য, নিম্বার্ক, ভাস্কর, বল্লভ, শ্রীধর স্বামী, আনন্দ গিরি, মধুসূদন সরস্বতি, সন্ত জ্ঞানেশ্বর, বালগঙ্গাধর তিলক, পরমহংস যোগানন্দ, মহাত্মা গান্ধী, মহর্ষি অরবিন্দ ঘোষ প্রমুখ ব্যক্তি গীতার ওপর প্রবচন দিয়েছেন।কে বা কারা, কখন মহাভারত থেকে গীতাকে পৃথক করে স্বতন্ত্র গ্রন্থ রুপে প্রকাশিত করেছে, তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় না।
গীতা থেকে শিক্ষালাভ
১. গর্ব, অভিমান এবং অহংকার এই তিন অনুভূতিকে আমরা একই রকম ভাবে দেখি। আমরা মনে করি এই তিনটি একই। কিন্তু আমাদের ধারণা ভুল। আমাদের মনের মধ্যে এই তিন অনুভূতি আসে নিজের প্রতি প্রেম ও অহংবোধ থেকে। আমরা যখন উন্নতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করি তখন আমাদের মনে জন্ম নেয় গর্ব, কঠোর পরিশ্রমের পর যখন আমরা সফল হই, সেই সফলতা জন্ম দেয় অভিমানের। কিন্তু সমস্যার সৃষ্টি হয় তখন যখন সেই অভিমান থেকে অহংকারের জন্ম হয়। কারণ অহংকার কখনো মানুষকে উপরে তুলতে পারেনা। ধীরে ধীরে নামিয়ে আনে অবনতির দিকে।
২. মানুষের সবথেকে বড় শত্রু হল তার নিজের রহস্য। নিজের রহস্যই আপনার বিনাশের জন্য যথেষ্ট। তাই নিজের রহস্য কখনো কাউকে বলা উচিত্ নয়। সেই রহস্য আপনার মধ্যে রহস্য হয়েই থাকতে দিন।
৩. ইন্দ্রিয় পাঁচটি। চক্ষু, কর্ন, জিহ্বা, নাসিকা এবং ত্বক। চোখ দিয়ে আমরা দেখি, কান দিয়ে শুনি। সৃষ্টিকর্তা আমাদের দুটো কান, দুটো চোখ, দুটো নাসারন্ধ্র দিয়েছেন। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি যে জিহ্বা একটা কেন দিয়েছেন? কারণ প্রকৃতি চায় আমরা কথা কম বলি। কারণ বেশি কথা সৃষ্টি করে বাচালতার। বাচালতা অনেক মানুষের বিনাশের কারণ হয়।
৪. মানুষ এমন এক ধরনের বিচিত্র শ্রেনীর প্রাণী যে সে নিজের থেকে আর্থিক দিক থেকে ছোট মানুষকে সর্বদা ঘৃনা করে। তাকে আরো নীচে দেখানোর চেষ্টা করে। সবার সামনে তাকে ছোট করে। তাকে নিরাস করে বলে যে তার দ্বারা জীবনে কিছুই হবেনা। কিন্তু তারা ভুলে যায় হাজার বড় বড় মানুষের থেকেও বড় একজন আছে। সে হল সময়। সময় কখন বদলে যায় কেউ জানেনা।
গল্পে কৃষ্ণ প্রেম
-কৃষ্ণের মাথাব্যাথা শ্রীল প্রভুপাদের গল্পে উপদেশ - যা থেকেই তিলক সৃষ্টি এই পদধূলি - একদিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর শয্যায় শায়িত অবস্থায় প্রচন্ড মাথা ব্যাথার ভান করছিলেন। অনেক রাজকীয় বৈদ্যগণ এসে নানপথ্য দিলেন, কিন্তু তাতে শ্রীকৃষ্ণের কোন উপকারই হলো না। কৃষ্ণ বলল কোন বৈদ্যই আমাকে সারাতে পারবে না। যদি কোন ভক্ত আমাকে তার পায়ের ধূলি দান করে শুধুমাত্র তখনই আমার মাথা ব্যাথা সারতে পারে। ভক্তরা উঠে বলল না না আমরা কিভাবে কৃষ্ণকে আমাদের পায়ের ধুলি দিব।তা আমরা কখোনই দিতে পারি না।আমরা যদি কৃষ্ণের মাথায় আমাদের পায়ের ধূলি দেই,তবে আমরা নরকে যাব।আমরা তা হতে দিতে পারি না। তাহলে কেউ যদি আমাকে পদধূলি দিতে রাজি না হও, তাহলে বৃন্দাবনে যাও এবং আমার সবচেয়ে প্রিয় ভক্ত গোপীদের কাছে গিয়ে তা চাও। তখন ভক্তগণ গিয়ে বললেন, “হে গোপীগণ, শ্রীকৃষ্ণ এক মারাত্মক মাথা ব্যাথায় আক্রান্ত, তার সুস্থতার জন্য তোমাদের পদধূলি দরকার।” কি! আমাদের কৃষ্ণের মাথা ব্যাথা! আর সে কিনা আমাদের পায়ের ধূলি চায়! দয়া করে তোমার যত খুশি ততো নিয়ে যাও। ভক্ত শ্রেষ্ঠ নারদমুনি বললেন, “তোমরা কি জাননা যে কৃষ্ণের মাথায় যদি কেউ পদধূলি দেয়, তবে তাকে নরকে যেতে হবে।” সখাগন+গোপীগন) বললেন,তাহাতে যদি মাধবের(কৃষ্ণ)মাথা ব্যাথা সেরে যায়, তবে তার বিনিময়ে আমরা নরকে যেতেও ইচ্ছুক আছি। হিতোপদেশ শুধু ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের ইচ্ছা এবং তার সেবার বাসনাই ভক্তিযোগের প্রকৃত নির্যাস!!আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের সেই লক্ষ্য খুঁজে পেতে হবে। আমাদের মূল নীতি গুলি মনে রাখতে হবে। আমাদের অর্থের দাস হওয়া উচিৎ নয়। মনে রাখতে হবে -আমরা যা উপার্জন করি-না কেন…? সেটা চিরকাল আমাদের থাকবে না। এটা আমাদের একমাত্র আত্মার সন্তুষ্টি ও তৃপ্তি জন্য করে থাকি। মনে কোনো সময় খারাপ চিন্তা না করা – আমাদের এই পরিবেশের মধ্যে ভালো এবং খারাপ, দুরকমের ভাবনাই আছে। তবে নেতিবাচক ভাবনার আকর্ষণ সবসময় বেশী হয়।
প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী,মানুষ সেদিকে বেশি আকৃষ্ট হয়। নিজের খারাপ ভাবনার জন্য,অন্যের ক্ষতি করাও উচিত নয়। খারাপ মানসিকতা নিয়ে,কখনো ভালো মানুষ হওয়া যায় না। কখনো বেশি আশা করবেন না – কখনো কোনও রকম আশা বা কামনাকে, প্রশ্রয় দিলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই কঠোর আত্ম সংযত রাখতে হবে। যার জন্ম আছে তার মৃত্যু বা ধ্বংস অনিবার্য – এই পৃথিবীতে -জড়-জীব সবকিছুরই নির্দিষ্ট জীবনচক্র রয়েছে। কোনও কিছুই স্থায়ী নয় বা অমর নয়। এটা প্রকৃতির জীবন চক্রের মূল সত্য। এই পৃথিবীতে সবকিছুই পরিবর্তনশীল – একমাত্র সময় স্থির। বাকি সব পরিবর্তনশীল। সময়ের সঙ্গে মানুষ বদলায়। সমাজের পরিবর্তন বা বিকাশ হয়। এই পৃথিবীতে পরিবর্তন সত্য। এই পৃথিবীতে সব কর্ম ঈশ্বরে নিবেদিত ঈশ্বরকে মনে রেখে কাজ করে যেতে হবে। ঈশ্বর ভাবনাই মনে শান্তি আনে ও তৃপ্তি দেয়। জীবনের প্রতি ইতিবাচক বা ভালো দৃষ্টি ভঙ্গীতে তাকাতে শেখায়। সত্য চিরকালের সবসময় ভালো কাজ করে যাওয়া উচিৎ, কারণ সত্য কখনও বদলায় না। যাই করি না কেন -সেটা মানুষের বা সমাজের উপকারে লাগা ভালো। ভয় না পেয়ে ভালো কাজের জন্য যা করা উচিত তা করে যেতে হবে। সব কিছুরকিছুর স্বাক্ষী ঈশ্বর, ভালো কাজ বিফলে যায় না।কাম/ ক্রোধ আর লোভ ত্যাগ করুন,প্রতিটি কাজের ফল এ জন্মেই পাবেন,আমৃত্যু নিজের কর্তব্য করে যাও,নিজের প্রতি বিশ্বাস হারাবেনা,মৃত্যু যখন নিশ্চিত তখন শোক কিসের?অধর্মের পথে বিনাশ নিশ্চিত,ক্রোধই মানুষের সবচেয়ে বড়ো শত্রূ। সন্দেহ মানুষের মন থেকে সুখ কেড়ে নেয়,কর্ম করে যাও, ফলের চিন্তা করোনা,মনকে লাগামছাড়া করে ফেলবেন না ।বর্তমানে বাঁচতে শেখো,আত্মভাবে থাকাই মুক্তি,রাগ শত্রুর সমান,ঈশ্বরের প্রতি সমর্পিত থাকুন, ঈশ্বরের প্রতি সমর্পিত থাকুন,দৃষ্টিকোণ শুদ্ধ রাখুন,মন শান্ত রাখুন,কাজ করার আগে বিচার করুন,নিজের কাজ করুন,মমত্বকে জীবিত রাখুন।
গীতার কিছু বাণী,কৃষ্ণের মূল্যবান উপদেশ,শ্রীকৃষ্ণেরবানী,গীতায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী,ভগবান শ্রীকৃষ্ণের গীতা জ্ঞান,ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বানী,গীতার কিছু মূল্যবান কথা,মহাপুরুষদের বলা কিছু, মূল্যবান উক্তি,ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী বাংলা,গীতার বাণী বাংলায়,ভক্তের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ,শ্রীকৃষ্ণের বাণী,
শ্রীকৃষ্ণের বলা কিছু মূল্যবান উপদেশ
গীতায় কী উপদেশ দিয়েছেন শ্রীকৃষ্ণ,তিনি বলেছেন যে পুরুষের বুদ্ধিতে গুণ ও দোষ অতীত, সে বালকের সমান নিষিদ্ধ কর্ম থেকে নিবৃত্ত হয়ে পড়ে, কিন্তু দোষ বুদ্ধি থেকে হয় না। সে বিহিত কর্মের অনুষ্ঠান করে, তবে গুণবুদ্ধির সহায্য নয়।এই জগতে যা কিছু মন দিয়ে ভাবা যায়, মুখ দিয়ে বলা যায়, চোখ দিয়ে দেখা যায়, শ্রবণ করা যায় ও ইন্দ্রিয়ের দ্বারা অনুভব করা যায়, সে সবের নাশ সম্ভব।স্বপ্নের মতোই মনের বিলাস। তাই এটি শুধু মায়া, মিথ্যা।পবিত্র গীতার বাণী ভগবৎ গীতায় আছে -ধ্যান করলে মানুষের উপকার হয়। নিরলস সাধনায় মানুষের অন্তরে শান্তি যোগায়। ইচ্ছাশক্তি বাড়ায়,জীবনের লক্ষ্যের প্রতি একাগ্রতা আনে। আমরা খালি হাতে এসেছি আর খালি হাতেই যেতে হবে ! নিরালম্ব মনুষ্য জন্ম। দিগম্বর অবস্থায় জন্ম নেয় শিশু। আক্ষরিক অর্থেই খালি হাতে। কিন্তু কোনও একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে প্রতিটা মানুষ পৃথিবীতে এসেছে।
গীতার বাণী বাংলা অর্থসহ- অনন্য চেতাঃ সততম্ যঃ মাম্ স্মরতি নিত্যশঃ । তস্য অহম্ সুলভঃ পার্থ নিত্যযুক্তস্য যোগিনঃ ।।১৪ অর্থ-যিনি একগ্র চিত্তে কেবল আমাকেই নিরন্তর স্মরন করেন, আমি সেই নিত্তযুক্ত ভক্ত যোগিদের কাছে সুলভ হই। আব্রহ্ম ভূবনাত্ লোকাঃ পুনঃ আবর্তিনঃ অর্জুন । মাম উপেত্য তু কৌন্তেয় পুনর্জন্ম বিদ্যতে ।।১৬ অর্থ-হে অর্জুন ভূবন থেকে ব্রহ্মলোক পর্য্যন্ত সমস্ত লোকই পুনরাবর্তনশীল কিন্তু হে কৌন্তেয়, আমাকে লাভ করলে তার আর জন্ম হয় না। অব্যক্ত অক্ষরঃ ইতি উক্তঃ তম আহুঃ পরমাম্ গতিম্ । যম্ প্রাপ্য ন নিবর্তন্তে তদ্ধাম্ পরমম্ মম্ ।।২১ অর্থ-সেই অব্যক্তকে অক্ষর বলে; তাই সমস্ত জীবের পরমা গতি। কেউ যখন সেখানে যায় তখন আর তাকে এই জগতে ফিরে আসতে হয় না। সেইটিই হচ্ছে আমার পরম ধাম। শুক্ল কৃষ্ণে গতী হি এতে জগতঃ শাশ্বতে মতে ।
একয়া যাতি অনাবৃত্তিম্ অন্যয়া আবর্ততে পুনঃ ।।২৬ অর্থ-বৈদিক মতে দুইটি মার্গ রয়েছে। একটি শুক্লএবং অপরটি কৃষ্ণ। শুক্ল মার্গে দেহ ত্যাগ করলে তাকে আর এই জগতে ফিরে আসতে হয় না,কিন্তু কৃষ্ণমার্গে দেহ ত্যাগ করলে,এই জড় জগতে আবার ফিরে আসতে হয়। অন্তবত্ তু ফলম্ তেষাম্ তত্ ভবতী অল্পমেধষাম । দেবান দেবযজঃ যান্তি মত্ ভক্তাঃ যান্তি মাম্ অপি ।।২৩ অর্থ-অল্পবুদ্ধি ব্যক্তিদের আরাধনার ফল লব্ধ অস্থাই। দেবতাদের উপসকেরা তাদের আরাধ্য দেবতাদের লোক প্রাপ্ত হন, কিন্তু আমার ভক্তরা আমা পরম ধাম প্রাপ্ত হন।
গীতা সম্পর্কে একাধিক চমকপ্রদ তথ্য রয়েছে
বেদের সারমর্মকে বেদান্ত বা উপনিষদ বলা হয়। উপনিষদের সার রয়েছে গীতার মধ্যে। গীতা সম্পর্কে একাধিক চমকপ্রদ তথ্য রয়েছে—
১. কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনকে গীতার জ্ঞান দিয়েছিলেন কৃষ্ণ। এটি শ্রীকৃষ্ণ-অর্জুন সংবাদ নামে বিখ্যাত।
২. গীতা কৃষ্ণ ও অর্জুনের কথোপকথন। কিন্তু কৃষ্ণের মাধ্যমে বিশ্বকে গীতার জ্ঞান দিয়েছিলেন পরমেশ্বর। কৃষ্ণ সে সময় যোগারূঢ় ছিলেন।
৩. গীতার চতুর্থ অধ্যায় কৃষ্ণ জানান, পূর্বে এই যোগ তিনি বিবস্বানকে জানিয়েছিলেন। বিবস্বান মনুকে জানান। মনু ইক্ষ্বাকুকে বলেন। এ ভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পরম্পরাগত ভাবে এই জ্ঞান অর্জন করে আসছেন রাজর্ষিরা। কিন্তু কালান্তরে এই যোগ লুপ্ত হয়ে গিয়েছে। সেই পুরনো যোগই অর্জুনকে পুনরায় জানাচ্ছেন। পরম্পরাগত ভাবে সবার আগে বিবস্বান (সূর্য) এই জ্ঞান পেয়েছিলেন। তাঁর পুত্র ছিলেন বৈবস্বত মনু।
৪. কৃষ্ণের গুরু ছিলেন ঘোর অঙ্গিরস। ঘোর অঙ্গিরস কৃষ্ণকে যে উপদেশ দিয়েছিলেন, সেই একই উপদেশ অর্জুনকে দেন কৃষ্ণ। ছান্দোগ্য উপনিষদে উল্লেখ পাওয়া যায় যে, কৃষ্ণ ঘোর অঙ্গিরসের শিষ্য ছিলেন। তার কাছ থেকে কৃষ্ণ এমন জ্ঞান অর্জন করেন, যার পর অন্য কিছু জ্ঞাতব্য থাকে না। দ্বাপর যুগে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনকে গীতার জ্ঞান দিলেও, এর প্রাসঙ্গিকতা এখনও বর্তমান।
৫. গীতায় ভক্তি, জ্ঞান ও কর্মের পথের আলোচনা করা হয়েছে। তাত যম-নিয়ম ও ধর্ম-কর্মের বিষয় জানানো রয়েছে। গীতা মতে ব্রহ্ম (ঈশ্বর) একটি। বার বার গীতা পড়লে এর জ্ঞানের রহস্য উন্মোচিত হবে। গীতার মাধ্যমে সৃষ্টি উৎপত্তি, জীব বিকাসক্রম, হিন্দু সন্দেবাহক ক্রম, মানব উৎপত্তি, যোগ, ধর্ম, কর্ম, ঈশ্বর, ভগবান, দেবী, দেবতা, উপাসনা, প্রার্থনা, যম, নিয়ম, রাজনীতি, যুদ্ধ, মোক্ষ, অন্তরিক্ষ, আকাশ, পৃথিবী, সংস্কার, বংশ, কুল, নীতি, অর্থ, পূর্বজন্ম, জীবনযাপন, রাষ্ট্র নির্মাণ, আত্মা, কর্মসিদ্ধান্ত, ত্রিগুণ সংকল্পনা, সমস্ত প্রাণীদের মধ্যে মৈত্রী ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা যায়।
৬.গীতা যোগশ্বর কৃষ্ণের বাণী। এর প্রতিটি শ্লোকে জ্ঞানের প্রকাশ রয়েছে। যা প্রস্ফুটিত হলেই অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর হয়। জ্ঞান, ভক্তি, কর্ম যোগ মার্গের বিস্তৃত ব্যাখ্যা পাওয়া যায় এখানে। এই পথে চললে ব্যক্তি নিশ্চিত ভাবেই পরমপদের অধিকারী হতে পারবে।
৭.৭.৩১১২ খ্রীষ্টপূর্বে কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। কলিযুগ শুরু হয়েছিল শক সম্বৎ ৩১৭৭ বছর আগের চৈত্র শুক্লের প্রতিপদায়। আর্যভট্টের মতে, ৩১৩৭ খ্রীষ্টপূর্বে মহাভারতের যুদ্ধ হয়েছিল। এই যুদ্ধের ৩৫ বছর পর দেহত্যাগ করেন কৃষ্ণ। তখন থেকেই কলিযুগের সূচনা মনে করা হয়। মৃত্যুকালে কৃষ্ণের বয়স ছিল ১১৯ বছর। আর্যভট্টের গণনা অনুযায়ী ৫১৫৪ বছর আগে অর্জুনকে গীতার জ্ঞান দিয়েছিলেন কৃষ্ণ।
৮.হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে যখন এই জ্ঞান দেওয়া হয়েছিল, তখন একাদশী তিথি ছিল। দিনটি ছিল সম্ভবত রবিবার। প্রায় ৪৫ মিনিট পর্যন্ত এই জ্ঞান দিয়েছিলেন তিনি। গীতায় কৃষ্ণ ৫৭৪, অর্জুন ৮৫, সঞ্জয় ৪০ ও ধৃতরাষ্ট্র ১টি শ্লোক বলেছিলেন।
৯.উপনিষদে গীতার গণনা করা হয়। তাই একে গীতোপনিষদও বলা হয়। এটি মহাভারতের ভীষ্ম পর্বের অংশ। মহাভারতের কিছু স্থানে হরিগীতা নামে এর উল্লেখ পাওয়া যায়
১০. অর্জুন যখন কর্তব্য বিমুখ হয়ে সন্যাসী ও বৈরাগীর মতো আচরণ করে যুদ্ধ ত্যাগ করতে উদগ্রীব হয়ে পড়েন, তখন তাঁকে গীতার জ্ঞান দেন কৃষ্ণ। অর্জুন ছাড়া সঞ্জয় গীতার জ্ঞান শোনেন এবং ধৃতরাষ্ট্রকে শোনান।
১১. গীতা এমন একটি গ্রন্থ, যার অনুবাদ, ব্যাখ্যা, টিপ্পণী, গবেষণাপত্র নানান ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। আদি শঙ্করাচার্য, রামানুজ, রামানুজাচার্য, মধ্বাচার্য, নিম্বার্ক, ভাস্কর, বল্লভ, শ্রীধর স্বামী, আনন্দ গিরি, মধুসূদন সরস্বতি, সন্ত জ্ঞানেশ্বর, বালগঙ্গাধর তিলক, পরমহংস যোগানন্দ, মহাত্মা গান্ধী, মহর্ষি অরবিন্দ ঘোষ প্রমুখ ব্যক্তি গীতার ওপর প্রবচন দিয়েছেন।কে বা কারা, কখন মহাভারত থেকে গীতাকে পৃথক করে স্বতন্ত্র গ্রন্থ রুপে প্রকাশিত করেছে, তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় না।
গীতা থেকে শিক্ষালাভ
১. গর্ব, অভিমান এবং অহংকার এই তিন অনুভূতিকে আমরা একই রকম ভাবে দেখি। আমরা মনে করি এই তিনটি একই। কিন্তু আমাদের ধারণা ভুল। আমাদের মনের মধ্যে এই তিন অনুভূতি আসে নিজের প্রতি প্রেম ও অহংবোধ থেকে। আমরা যখন উন্নতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করি তখন আমাদের মনে জন্ম নেয় গর্ব, কঠোর পরিশ্রমের পর যখন আমরা সফল হই, সেই সফলতা জন্ম দেয় অভিমানের। কিন্তু সমস্যার সৃষ্টি হয় তখন যখন সেই অভিমান থেকে অহংকারের জন্ম হয়। কারণ অহংকার কখনো মানুষকে উপরে তুলতে পারেনা। ধীরে ধীরে নামিয়ে আনে অবনতির দিকে।
২. মানুষের সবথেকে বড় শত্রু হল তার নিজের রহস্য। নিজের রহস্যই আপনার বিনাশের জন্য যথেষ্ট। তাই নিজের রহস্য কখনো কাউকে বলা উচিত্ নয়। সেই রহস্য আপনার মধ্যে রহস্য হয়েই থাকতে দিন।
৩. ইন্দ্রিয় পাঁচটি। চক্ষু, কর্ন, জিহ্বা, নাসিকা এবং ত্বক। চোখ দিয়ে আমরা দেখি, কান দিয়ে শুনি। সৃষ্টিকর্তা আমাদের দুটো কান, দুটো চোখ, দুটো নাসারন্ধ্র দিয়েছেন। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি যে জিহ্বা একটা কেন দিয়েছেন? কারণ প্রকৃতি চায় আমরা কথা কম বলি। কারণ বেশি কথা সৃষ্টি করে বাচালতার। বাচালতা অনেক মানুষের বিনাশের কারণ হয়।
৪. মানুষ এমন এক ধরনের বিচিত্র শ্রেনীর প্রাণী যে সে নিজের থেকে আর্থিক দিক থেকে ছোট মানুষকে সর্বদা ঘৃনা করে। তাকে আরো নীচে দেখানোর চেষ্টা করে। সবার সামনে তাকে ছোট করে। তাকে নিরাস করে বলে যে তার দ্বারা জীবনে কিছুই হবেনা। কিন্তু তারা ভুলে যায় হাজার বড় বড় মানুষের থেকেও বড় একজন আছে। সে হল সময়। সময় কখন বদলে যায় কেউ জানেনা।
গল্পে কৃষ্ণ প্রেম
-কৃষ্ণের মাথাব্যাথা শ্রীল প্রভুপাদের গল্পে উপদেশ - যা থেকেই তিলক সৃষ্টি এই পদধূলি - একদিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর শয্যায় শায়িত অবস্থায় প্রচন্ড মাথা ব্যাথার ভান করছিলেন। অনেক রাজকীয় বৈদ্যগণ এসে নানপথ্য দিলেন, কিন্তু তাতে শ্রীকৃষ্ণের কোন উপকারই হলো না। কৃষ্ণ বলল কোন বৈদ্যই আমাকে সারাতে পারবে না। যদি কোন ভক্ত আমাকে তার পায়ের ধূলি দান করে শুধুমাত্র তখনই আমার মাথা ব্যাথা সারতে পারে। ভক্তরা উঠে বলল না না আমরা কিভাবে কৃষ্ণকে আমাদের পায়ের ধুলি দিব।তা আমরা কখোনই দিতে পারি না।আমরা যদি কৃষ্ণের মাথায় আমাদের পায়ের ধূলি দেই,তবে আমরা নরকে যাব।আমরা তা হতে দিতে পারি না। তাহলে কেউ যদি আমাকে পদধূলি দিতে রাজি না হও, তাহলে বৃন্দাবনে যাও এবং আমার সবচেয়ে প্রিয় ভক্ত গোপীদের কাছে গিয়ে তা চাও। তখন ভক্তগণ গিয়ে বললেন, “হে গোপীগণ, শ্রীকৃষ্ণ এক মারাত্মক মাথা ব্যাথায় আক্রান্ত, তার সুস্থতার জন্য তোমাদের পদধূলি দরকার।” কি! আমাদের কৃষ্ণের মাথা ব্যাথা! আর সে কিনা আমাদের পায়ের ধূলি চায়! দয়া করে তোমার যত খুশি ততো নিয়ে যাও। ভক্ত শ্রেষ্ঠ নারদমুনি বললেন, “তোমরা কি জাননা যে কৃষ্ণের মাথায় যদি কেউ পদধূলি দেয়, তবে তাকে নরকে যেতে হবে।” সখাগন+গোপীগন) বললেন,তাহাতে যদি মাধবের(কৃষ্ণ)মাথা ব্যাথা সেরে যায়, তবে তার বিনিময়ে আমরা নরকে যেতেও ইচ্ছুক আছি। হিতোপদেশ শুধু ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের ইচ্ছা এবং তার সেবার বাসনাই ভক্তিযোগের প্রকৃত নির্যাস!!আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের সেই লক্ষ্য খুঁজে পেতে হবে। আমাদের মূল নীতি গুলি মনে রাখতে হবে। আমাদের অর্থের দাস হওয়া উচিৎ নয়। মনে রাখতে হবে -আমরা যা উপার্জন করি-না কেন…? সেটা চিরকাল আমাদের থাকবে না। এটা আমাদের একমাত্র আত্মার সন্তুষ্টি ও তৃপ্তি জন্য করে থাকি। মনে কোনো সময় খারাপ চিন্তা না করা – আমাদের এই পরিবেশের মধ্যে ভালো এবং খারাপ, দুরকমের ভাবনাই আছে। তবে নেতিবাচক ভাবনার আকর্ষণ সবসময় বেশী হয়।
প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী,মানুষ সেদিকে বেশি আকৃষ্ট হয়। নিজের খারাপ ভাবনার জন্য,অন্যের ক্ষতি করাও উচিত নয়। খারাপ মানসিকতা নিয়ে,কখনো ভালো মানুষ হওয়া যায় না। কখনো বেশি আশা করবেন না – কখনো কোনও রকম আশা বা কামনাকে, প্রশ্রয় দিলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই কঠোর আত্ম সংযত রাখতে হবে। যার জন্ম আছে তার মৃত্যু বা ধ্বংস অনিবার্য – এই পৃথিবীতে -জড়-জীব সবকিছুরই নির্দিষ্ট জীবনচক্র রয়েছে। কোনও কিছুই স্থায়ী নয় বা অমর নয়। এটা প্রকৃতির জীবন চক্রের মূল সত্য। এই পৃথিবীতে সবকিছুই পরিবর্তনশীল – একমাত্র সময় স্থির। বাকি সব পরিবর্তনশীল। সময়ের সঙ্গে মানুষ বদলায়। সমাজের পরিবর্তন বা বিকাশ হয়। এই পৃথিবীতে পরিবর্তন সত্য। এই পৃথিবীতে সব কর্ম ঈশ্বরে নিবেদিত ঈশ্বরকে মনে রেখে কাজ করে যেতে হবে। ঈশ্বর ভাবনাই মনে শান্তি আনে ও তৃপ্তি দেয়। জীবনের প্রতি ইতিবাচক বা ভালো দৃষ্টি ভঙ্গীতে তাকাতে শেখায়। সত্য চিরকালের সবসময় ভালো কাজ করে যাওয়া উচিৎ, কারণ সত্য কখনও বদলায় না। যাই করি না কেন -সেটা মানুষের বা সমাজের উপকারে লাগা ভালো। ভয় না পেয়ে ভালো কাজের জন্য যা করা উচিত তা করে যেতে হবে। সব কিছুরকিছুর স্বাক্ষী ঈশ্বর, ভালো কাজ বিফলে যায় না।কাম/ ক্রোধ আর লোভ ত্যাগ করুন,প্রতিটি কাজের ফল এ জন্মেই পাবেন,আমৃত্যু নিজের কর্তব্য করে যাও,নিজের প্রতি বিশ্বাস হারাবেনা,মৃত্যু যখন নিশ্চিত তখন শোক কিসের?অধর্মের পথে বিনাশ নিশ্চিত,ক্রোধই মানুষের সবচেয়ে বড়ো শত্রূ। সন্দেহ মানুষের মন থেকে সুখ কেড়ে নেয়,কর্ম করে যাও, ফলের চিন্তা করোনা,মনকে লাগামছাড়া করে ফেলবেন না ।বর্তমানে বাঁচতে শেখো,আত্মভাবে থাকাই মুক্তি,রাগ শত্রুর সমান,ঈশ্বরের প্রতি সমর্পিত থাকুন, ঈশ্বরের প্রতি সমর্পিত থাকুন,দৃষ্টিকোণ শুদ্ধ রাখুন,মন শান্ত রাখুন,কাজ করার আগে বিচার করুন,নিজের কাজ করুন,মমত্বকে জীবিত রাখুন।
গীতার কিছু বাণী,কৃষ্ণের মূল্যবান উপদেশ,শ্রীকৃষ্ণেরবানী,গীতায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী,ভগবান শ্রীকৃষ্ণের গীতা জ্ঞান,ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বানী,গীতার কিছু মূল্যবান কথা,মহাপুরুষদের বলা কিছু, মূল্যবান উক্তি,ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী বাংলা,গীতার বাণী বাংলায়,ভক্তের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ,শ্রীকৃষ্ণের বাণী,
হরেকৃষ্ণ