যবন হরিদাস ঠাকুর

যবন হরিদাস ঠাকুর -বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার অন্তর্গত কেড়াগাছি গ্রামে ১৩৭২ বঙ্গাব্দে, ১৪৪৯ খ্রীষ্টাব্দে অগ্রাহয়ন মাসে শ্রী হরিদাস ঠাকুর জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সুমতি মিশ্র এবং মাতার নাম গৌরীদেবী। হরিদাসের বয়স যখন দু'মাস সেই সময় সুমতি মিশ্র পরলোক গমন করেন। সতীসাধ্বী গৌরীদেবী স্বামীর চিতায় সহমরন বরণ করেন এবং ঠাকুর হরিদাস সম্পূর্ণ অনাথ হয়ে পরেন। 

শিশু হরিদাস ঠাকুরের লালন পালনে কেউ এগিয়ে না এলে সুমতি মিশ্রের বন্ধু চাষী হাবিবুল্লা কাজী দয়া পরবশ হয়ে এই অনাথ শিশুটির দায়িত্ব গ্রহন করেন। হাবিবুল্লা কাজীর স্ত্রীর আদর যত্নে হরিদাস প্রতিপালন হয়ে থাকেন। এই ভাবে যবনের অন্নে যবনের ঘরে প্রতিপালন হবার জন্যই তাঁকে যবন হরিদাস বলা হয়। বাল্য থেকে কৈশরে পদার্পন করার পর পালন কর্তা তাঁকে গরু চরানোর কর্মে নিয়োগ করেন। 

হরিদাস ঠাকুর/সনাতনী আলাপন   

হরিদাসের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর অন্তরে যেন কিসের একটা প্রবল আকর্ষণ অনুভব করতে থাকেন। যার ফলে যেখানেই হরিনাম সংকীর্ত্তণ হতো সেখানেই ছুটে যেতেন হরিদাস।

অন্তরে ঈশ্বর ভক্তি ও হরিনামে প্রবল অনুরাগ দেখা দিল, এবার তিনি সব সময় উচ্চস্বরে হরিনাম জব করতে লাগলেন। এমনি ভাবে চলতে থাকাবস্হায় কাজীর দরবারে তাঁর বিরুদ্ধে নালিশ গেল, কাজীর হুকুমে জল্লাদ হরিদাসের পায়ে রশি বেঁধে টানতে টানতে বাইশ বাজারে বেত্রাঘাত করে ঘুরালেও তাঁর হরিনাম বন্ধ করতে পারলো না। হরিনামের প্রতি একনিষ্ঠ অবিচল ভক্তি দেখে সকলেই বিস্মিত ও স্হম্ভিত হলো। বিচারক কাজী সাহেব তার অন্যায় বিচারের অনুতাপ প্রকাশ করে ঠাকুর হরিদাসকে অন্যত্র চলে যাবার জন্য অনুরোধ করলেন। 

নিজ গ্রামের পারিপার্শ্বিক প্রতিকুলাবস্হা অনুধাবন করে কোন এক নির্জন নিশিথে ঠাকুর হরিদাস অজানার উদ্দেশ্যে পথে বেরিয়ে পরলেন। ঘুরতে ঘুরতে ঠাকুর হরিদাস তৎকালীন সময়ের প্রতাপশালী রাজা রামচন্দ্র খাঁর অধীনে গহীনে জঙ্গলে আশ্রয় নিলেন। সেই জঙ্গলাকীর্ণ স্হানটি আজকের বেনাপোল নামাচার্য্য শ্রী শ্রী ব্রক্ষ হরিদাস ঠাকুরের পাটবাড়ী আশ্রম। এহেন জঙ্গলাকীর্ণ আশ্রমে ঠাকুর হরিদাস যখন হরিনাম জপ সাধনে নিমগ্ন তখন হরিদাস ঠাকুরের প্রতিদিন তিন লক্ষ বার হরিনাম জপের কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পরতে থাকে। তার সুধাময় কন্ঠের মধুর হরিনামাকর্ষনে দলে দলে ভক্ত ছুটে এল পর্ণ কুঠিরে। পর্ণকুঠির হলো প্রেম কানন। 

ভক্তের আগমনে সেই জঙ্গলাকীর্ণ আশ্রম পরিনত হলো মহাতীর্থ স্হানে। অত্যাচারী রাজা রামচন্দ্র খাঁ ঠাকুর হরিদাসের গুনগান সহ্য করতে না পেরে তাঁকে জ্যান্ত পুরিয়ে মারার অভিপ্রায় বিফল হলে তৎকালীন হীরানামক এক বার- বনিতাকে দিয়ে তার সাধন, ভজন, যশ, খ্যাতি, ধর্ম নাশ করার চক্রান্ত করতে থাকে। সমস্ত চক্রান্তে ব্যর্থ হয়ে বার-বনিতা হীরা হরিনাম মহামন্ত্রে দিক্ষিত হয়ে হরিদাস ঠাকুরের পরম বৈষ্ণবী হয়ে যান। নামাচার্য্য শ্রী শ্রী ব্রক্ষ হরিদাস ঠাকুর ছিলেন প্রকৃত বৈষ্ণবের জলন্ত নিদর্শন এবং দৈন্যের অবতার তিনি প্রতিদিন তিন লক্ষ বার হরিনাম জপ করে নামাচার্য্য নামে খ্যাত হন এবং ব্রক্ষত্ব অর্জন করেন। তিনি হরিনাম করতে করতে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর কোলে অন্তিম নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এবং মহাপ্রভু নিজ হস্তে পরিষদ বর্গকে সঙ্গে করে পুরীধামে তাঁর সমাধী স্হাপন করেন। রাজা রাম চন্দ্রের অত্যাচারের সময় গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু পরিষদ বর্গকে সঙ্গে করে এই বেনাপোল আশ্রমে আসেন। কথিত আছে অদ্বৈত মহাপ্রভুর হাতের স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে রেখে যান যা আজ অবনত মস্তকে দন্ডায়মান সু-বৃহৎ তমাল বৃক্ষ। 

এই সেই মাধবী লতা যেখানে বসে ঠাকুর হরিদাস বদ্ধ জীবগনের মুক্তির লক্ষ্যে দিন রাত তিন লক্ষ বার নাম যব করতেন। আজ ও বিদ্যমান সাড়ে পাঁচশত বছরের মাধবীলতা যা আজ বৃক্ষে পরিনত। এই সেই সিদ্ধপীঠ তীর্থভূমি। নামাচার্য্য শ্রী শ্রী ব্রক্ষ হরিদাস ঠাকুরের পাটবাড়ী আশ্রম। নামাচার্য্য শ্রী শ্রী ব্রক্ষ হরিদাস ঠাকুরের জীবনীর উপর বাংলাদেশ ও ভারতে বহু গ্রন্থ রচিত ও প্রকাশিত আছে এছাড়া চৈতন্য চরিতামৃত গ্রন্থে হরিদাস ঠাকুরের জীবনীর বিষদ আলোচনা রয়েছে যা থেকে আপনারা হরিদাসকে জানতে ও তার সাধনলীলা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারবেন।

ভগবানের নাম যখন ভগবানকে লক্ষ করে উচ্চারিত না হয়ে, অন্য কাউকে লক্ষ করে উচ্চারিত হয় তাহাই ''নামাভাস''। এই নামাভাসেও জীব উদ্ধার হয়। ''নামাভাসে মুক্তি হয় সর্বশাস্ত্রে দেখি,শ্রীভাগবতে তার অজামিল সাক্ষী''।। চৈতন্যচরিতামৃত -অজামিল ছিলেন কান্যকুব্জের (বর্তমান ভারতের কনৌজের) অধিবাসী। তার পিতা-মাতা তাকে সদাচার ব্রাহ্মনে পরিনত হওয়ার শিক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু বিগত জন্মের কর্মফলে এক প্রভাতে নির্জন বনের মধ্যে এক অপ্সরা সম সুন্দরী ষোড়শী কন্যার সহিত তার পরিচয় হয়। আসলে সেই কন্যাটি ছিল এক বেশ্যা। সেই বেশ্যার প্রতি আসক্তিপুর্বক অজামিলের সদাচার ভ্রষ্ট ও অধঃপতিত হয়ে সেই বেশ্যাকে বিয়ে করে আর গৃহে ফিরে যায়নি। বনের পাশে এক বসতবাড়ি গড়ে পাপিষ্ঠ ভোগের জীবন শুরু করেন। 

সেই বেশ্যার গর্ভে অজামিলের দশটি পুত্র হয়, এবং তার মধ্যে কনিষ্ঠ পুত্রের নাম ছিল নারায়ন। অজামিলের মৃত্যুর সময় যমদুতেরা যখন নরকে নিয়ে যেতে আসে, তখন যমদুতের বিকৃত চেহেরার ভয়ে উচ্চস্বরে তার প্রিয়পুত্র নারায়নকে ডাকতে থাকে। তারফলে তার ভগবান নারায়নের স্মৃতি উদয় হয়। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে চারজন বিষ্ণুদুত এসে হাজির হয়ে যমদুতের হাত থেকে অজামিলকে মুক্ত করেন। এবং অজামিল বৈকূণ্ঠলোক প্রাপ্ত হন। যমদূতেরা নিরাশ ও আশ্চর্য হয়ে যমরাজের কাছে গেলে , যমরাজ তাদের বিস্তারিতভাবে ভাগবত - ধৰ্ম সম্বন্ধে উপদেশ দেন । যমরাজ এইভাবে ভগ্নমনোরথ যমদূতদের সান্তনা দিয়েছিলেন ।

যমরাজ বলেছিলেন , “ অজামিল যদিও তার নারায়ন পুত্ৰকে ডেকেছিলেন , তবুও তিনি নারায়ণের পবিত্ৰ নাম উচ্চারণ করেছিলেন এবং সেই নামাভাসের ফলেই তিনি বিষ্ণুদূতদের সঙ্গ লাভ করেছিলেন , যাঁরা তোমাদের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করেছিলেন । তা যথাৰ্থই হয়েছে , কারণ মহাপাতকীও যদি ভগবানের নাম গ্ৰহণ করে , সেই নাম সম্পূৰ্ণরুপে অপরাধশূন্য না হলেও তাকে আর জড় জগতে জন্মগ্ৰহণ করতে হয় না। ভগবানের পবিত্ৰ নাম গ্ৰহণের ফলে , চারজন বিষ্ণুদূতের সঙ্গে অজামিলের সাক্ষাৎ হয়েছিল ।তাঁরা ছিলেন অত্যন্ত সুন্দর এবং তাকে উদ্ধার করতে অতি দ্ৰুতগতিতে তারা এসেছিলেন''।

হরিদাস ঠাকুরের মহিমা:
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যখন গৃহস্থ ও লীলা করছিলেন তখন সমস্ত দেশ আধ্যাত্মিক বিষয়ে শূন্য ছিল। যদিও কেউ, গীতা-ভাগবতাদি শাস্র সমূহের ব্যাখ্যা করত। কিন্ত তাদের সেই ব্যাখ্যায়-'ভগবান শ্রীকৃষ্ণে ভক্তি করাই জীবনের উদ্দেশ্য' তা শোনা যেত না। অতি অল্পসংখ্যক শুদ্ধভক্ত সম্মিলিত ভাবে নির্জনে পরস্পর হরিনাম সংকীর্তন করতেন। তা দেখে সকলেই তাঁদের পরিহাস ও নির্যাতন করত। ভক্তগণ তাঁদের মনের বেদনা কাকে বলবেন? এমন সময় নদীয়ায় হরিদাস ঠাকুর এসে উপস্থিত হন। হরিদাস ঠাকুর বর্তমান বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার কেঁড়াগাছি (বুঢ়ন) গ্রামে আবির্ভূত হন। তাঁর কৃপার প্রভাবে সেই স্থানে হরিনাম সংকীর্তনের ব্যাপক প্রচার হয়। তিনি গঙ্গাতীরে বাস করার অছিলায় প্রথমে নদীয়া জেলার ফুলিয়ায় এবং তারপর শান্তিপুরে শ্রীঅদ্বৈতাচর্যের সঙ্গে মিলিত হন। হরিদাস ঠাকুর সর্বদা হরিনাম সংকীর্তনে মগ্ন ছিলেন তা দর্শন করে ফুলিয়ার ব্রাহ্মণ সমাজ তাঁর প্রতি বিশেষভাবে শ্রদ্ধাশীল হলেন। এমন সময় হরিদাস বিরুদ্ধে মুলুক-অধিপতির নিকটে মহাপাপী কাজী অভিযোগ করলেন যে, হরিদাস যবন কূলে লালিত পালিত হয়েও হিন্দুর ভগবানের নাম কীর্তন ও প্রচার করছেন। মুলুকপতি হরিদাস ঠাকুরকে ধরে আনার জন্য সৈনিক পাঠালে তিনি নির্ভয়ে কৃষ্ণনাম করতে করতে যবনাধিপতিকে দর্শন দিলেন। কারাগারে বন্দি কয়েদীরা ঠাকুর হরিদাসকে দর্শন করার জন্য কারা রক্ষকের কাছে বিশেষভাবে অনুনয় বিনয় করলে হরিদাস ঠাকুর কারাগারে এসে কয়েদীর বিষয় ভুলে সর্বদা হরিনাম কীর্তন করার উপদেশ দিলেন।
মুসলমান অধিপতি হরিদাস ঠাকুরকে হিন্দুধর্ম গ্রহণের কারণ জিজ্ঞাসা করলে হরিদাস ঠাকুর উত্তরে জানালেন যে, সকলেরই ঈশ্বর এক অদ্বয়জ্ঞানতত্ত্ব। তিনি পরমাত্মারূপে সকলের হৃদয়ে অবস্থান করেন এবং যাকে যেভাবে পরিচালিত করেন সে সেইভাবেই কাজ করে মুলুকপতি হরিদাস ঠাকুরকে শাস্তি ভয় দেখিয়ে নিজের মুসলমান ধর্ম পালন করতে নির্দেশ দিল। হরিদাস ঠাকুর বললেন যে, তাঁর শরীর যদি খণ্ড খণ্ড হয়ে যায়, শরীর থেকে প্রাণ যদি বেরও হয়ে যায় তবুও তিনি হরিনাম সংকীর্তন ছাড়বেন না, কারণ এটিই
জীবের প্রকৃত ধর্ম। কাজীর আদেশ অনুসারে বাইশ বাজারে দুষ্টগণ অতি নিষ্ঠুরভাবে ঠাকুরকে বেত্রাঘাত করতে লাগলেন। তবুও ঠাকুরের শ্রীঅঙ্গে কোন প্রকার দুঃখের চিহ্ন প্রকাশিত হল না বা প্রাণত্যাগও করলেন না। তা দেখে মুলুকপতির অনুচরেরা বিস্মিত হল। হরিনাম সংকীর্তনের আনন্দে হরিদাস ঠাকুর সর্বক্ষণ মগ্ন থাকয় প্রহ্লাদ মহারাজের ন্যায় এত কঠোর বেত্রাঘাতেও তাঁর কোন কষ্ট হল না, বরং তিনি অত্যাচারীদের মহাবৈষ্ণব অপরাধ থেকে মুক্ত করার জন্য ভগবানের নিকট প্রাথনা করছিলেন।

হরিদাস ঠাকুর যখন জানতে পারলেন তিনি দেহত্যাগ না করলে এই সৈনিকদের প্রাণদণ্ড হবে তখন তিনি সমাধিস্থ হলেন। তখন তাঁর শরীরে বিশ্বম্ভরের অধিষ্ঠান হওয়ায় শত চেষ্টা করেও সৈনিকেরা হরিদাস ঠাকুরকে নাড়াতে পারল না। পাষণ্ডী কাজী হরিদাস ঠাকুরের অসৎগতি হওয়ার জন্য তাঁকে কবর না দিয়ে গঙ্গায় নিক্ষেপ করতে নির্দেশ দিলেন। এইভাবে হরিদাস ঠাকুর গঙ্গায় ভাসতে ভাসতে যখন বাহ্যদশা ফিরে পেলেন তখন পুনরায় হরিনাম সংকীর্তন করতে করতে ফুলিয়া গ্রামে এলেন। যবনগণ হরিদাস ঠাকুরের ঐশ্বর্য দর্শন করে সকলেই অভিভূত হয়ে পীর জ্ঞান করতে লাগলেন। মুলুকপতি এসে জোড় হাতে তাঁর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন এবং রাজ্যে হরিনাম সংকীর্তন করার জন্য অনুমতি দিলেন। ফুলিয়ার ব্রাহ্মণ সমাজ পুনরায় হরিদাস ঠাকুরকে পেয়ে বিশেষভাবে আনন্দিত হলেন।

হরিদাস ঠাকুর দৈন্যভাবে বললেন যে, বিষ্ণুনিন্দা শ্রবণ করার ফলে তাঁর মহা অপরাধ হয়েছিল কিন্ত সৌভাগ্যবতঃ এই অল্প শাস্তি পেতে হল। গঙ্গাতীরে এক গুহায় যেখানে এক ভয়ঙ্কর সাপ থাকত সেখানে হরিদাস ঠাকুর তিনলক্ষ হরিনাম করতে লাগলেন। সেই সাপ হরিদাস ঠাকুরের ইচ্ছাক্রমে সেইথান ত্যাগ করে চলে যায়। একদিন কোন এক ধনীব্যক্তির বাড়িতে এক সাপুড়িয়া কালীয়দহে শ্রীকৃষ্ণেরলীলার মাহাত্ম্য কীর্তন করছিলেন। হরিদাস ঠাকুর তা শ্রবণ করে কৃষ্ণপ্রেমে অষ্টসাত্বিক বিকার প্রকাশ করলেন, মাটিতে গড়াগড়ি দিতে লাগলেন। তাঁর শ্রীচরণের ধূলি সকলেই অঙ্গে লেপন করতে লাগল। এই ভাব দর্শন করে এক কপট ব্রাহ্মণ আরো বেশি প্রতিষ্ঠা লাভের আশায় কীর্তনের মাঝে আছাড় খেয়ে পড়লেন। তৎক্ষণাৎ সেই সাপুড়ে তাকে বেত্রাঘাতে জর্জরিত করলে সে সেই স্থান ত্যাগ করল। তারপর সেই সাপুড়ে হরিদাস ঠাকুরের মহিমা কীর্তন শুরু করলেন। "হরিদাস ঠাকুরের নৃত্যে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ নৃত্য করেন, এই নৃত্য দর্শন করে ব্রহ্মাণ্ড পবিত্র হয়। তাঁর হৃদয়ে সর্বদা শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র বিরাজ করেন। ব্রহ্মা, শিবও তাঁর সঙ্গ লাভের প্রার্থনা করেন। বেদের সত্যতা রক্ষার জন্য তিনি যবন কূলে লালিত পালিত হয়েছিলেন, তাঁকে দর্শন করলেই জীবের কর্মবন্ধন নাশ হয়, তাঁর নাম উচ্চারণ করলে শ্রীকৃষ্ণধাম প্রাপ্তি হয়"।

সাপুড়ের মুখে হরিদাস ঠাকুরের মহিমা শ্রনণ করে সকলেই অত্যন্ত আনন্দিত হলেন। সেই সময় পাষণ্ডীরা উচ্চঃস্বরে হরিনামের বিরোধিতা করতেন। উচ্চঃস্বরে হরিনাম করলে তাদের শান্তি ভঙ্গ হয় ও দুর্ভিক্ষ হয় এই ভাবে বিচার করত। হরিনদী গ্রামের এক ব্রাহ্মণ হরিদাস ঠাকুরকে উচ্চঃস্বরে হরিনাম করতে নিষধ করেন এবং জাতি বুদ্ধি দোষে দুষ্ট হয়ে হরিদাস ঠাকুরের নাক কান কাটতে চাইলেন। হরিদাস ঠাকুর উচ্চঃস্বরে হরিনামের মাহাত্ম্য শাস্রসম্মত ভাবে প্রতিষ্ঠা করলেন। কিছুদিনের মধ্যেই সেই ব্রাহ্মণের বসন্ত রোগে নাক কান খসে যায়। তারপর তিনি শ্রীঅদ্বৈতাদি শুদ্ধভক্তগণের সঙ্গ লালসায় নবদ্বীপে গমন করলেন।

এই ওয়েবসাইটটিতে আরো জানতে পারবেন 
যবন হরিদাস,হরিদাস ঠাকুর,
হরিদাস ঠাকুরের জীবনী,
ঠাকুর হরিদাস জীবন,
যবন হরিদাস ঠাকুর,
ব্রহ্ম হরিদাস ঠাকুর,
নামাচার্য হরিদাস ঠাকুর,
যবন হরিদাস কীর্তন,
ঠাকুর হরিদাসের জীবন,
হরিদাস ঠাকুরের কীর্তন,
হরিদাস ঠাকুরের জীবন কাহিনী,
হরিদাস ঠাকুরের জীবন কাহিনি,
হরিদাস ঠাকুর জীবনী,
হরিদাস ঠাকুর কেন যবন কূলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন,
শ্রীল হরিদাস ঠাকুর,
ভক্ত হরিদাস ঠাকুর কে,
হরিদাস ঠাকুরের মহিমা,
ভক্ত হরিদাস ঠাকুরের জীবনী,
হরিদাস ঠাকুরের নির্জন,
হরিদাস,
হরিদাস ঠাকুরের নির্যাণ,
হরিদাস জীবন
Next Post Previous Post
4 Comments
  • নামহীন
    নামহীন March 14, 2022 at 10:16 AM

    সুন্দর করে বোঝানোর জন্য ধন্যবাদ।

  • piya sen
    piya sen March 17, 2022 at 5:40 PM

    ধন্যবাদ 🙏🙏

  • নামহীন
    নামহীন March 29, 2022 at 8:54 AM

    সুন্দর লিখেছেন ������

  • নামহীন
    নামহীন April 18, 2022 at 4:50 PM

    অনেক সাইট ঘোরার পর যবন হরিদাস সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেলাম। thank you from India..

Add Comment
comment url