দোল পূর্ণিমা ও বাঙালির উৎসব হোলি
![]() |
মেয়েদের হোলি/thehindu9.blogspot.com |
দোল পূর্ণিমা বা হোলি কি?
দোলনযাত্রা উৎসবে সাধারণত রঙ বা আবির/এক ধরনের গুড়ো রং নিয়ে একে অন্যের গাঁয়ে দিয়ে দেয়া হয়ে থাকে। ব্যপারটা অনেকটা রঙ দিয়ে খেলার মতো।
হিন্দু/সনাতনীর হোলি বা দোলযাত্রাঃ হোলি বা দোলযাত্রা
স্কন্দপুরাণ গ্রন্থের ফাল্গুনমাহাত্ম্য গ্রন্থাংশে হোলিকা ও প্রহ্লাদের উপাখ্যান বর্ণিত আছে। হোলিকা ছিলেন মহর্ষি কশ্যপ ও তাঁর পত্নী দিতির পুত্র হিরণ্যকশিপুর বোন। ব্রহ্মার বরে হিরণ্যকশিপু দেব ও মানব বিজয়ী হয়ে দেবতাদের অবজ্ঞা করতে শুরু করেছিলেন। ভক্ত প্রহ্লাদ অসুর বংশে জন্ম নিয়েও পরম ধার্মিক ছিলেনএজন্য তাঁকে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও হত্যা করা যাচ্ছিল না।তখন হিরণ্যকিশপুর বোন হোলিকা প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে আগুনে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন। কারন ছিলো যে, হোলিকা এই বর পেয়েছিল আগুনে তার কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু অন্যায় কাজে শক্তি প্রয়োগ করায় হোলিকা প্রহ্লাদকে নিয়ে আগুনে প্রবেশ করলে বিষ্ণুর কৃপায় প্রহ্লাদ অগ্নিকুণ্ড থেকেও অক্ষত থেকে যায় আর ক্ষমতার অপব্যবহারে হোলিকার বর নষ্ট হয়ে যায় এবং হোলিকা পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যায়,আর সেই থেকেই হোলি কথাটির উৎপত্তি।
অপরদিকে বসন্তের পূর্ণিমার এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কেশি নামক অসুরকে বধ করেন এবং কোথাও আবার অরিষ্টাসুর নামক অসুর বধের কথাও আছে।এরপর অন্যায় শক্তিকে ধ্বংসের আনন্দ মহাআনন্দে পরিণত হয়। দোলযাত্রা বা হোলি উৎসব সংক্রান্ত পৌরাণিক উপাখ্যান ও লোককথাগুলি মূলত দুই প্রকার: ১ম টি দোলযাত্রার পূর্বদিন পালিত বহ্ন্যুৎসব হোলিকাদহন বা নেড়াপোড়া সংক্রান্ত ও ২য়টি রাধা ও কৃষ্ণের দোললীলা বা ফাগুখেলা কেন্দ্রিক।
বিভিন্ন এলাকা ভেদে হোলি বা দোল উদযাপনের ভিন্ন ব্যাখ্যা কিংবা এর সঙ্গে সংপৃক্ত লোককথার ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু উদযাপনের রীতি একই ।বাংলায় আমরা বলি ‘দোলযাত্রা’ আর পশ্চিম ও মধ্যভারতে ‘হোলি বলে। রঙ উৎসবের আগের দিন অত্যন্ত ধুমধাম করে ‘হোলিকা দহন’ হয় । শুকনো গাছের ডাল, কাঠ ইত্যাদি দাহ্যবস্তু সংগ্রহ করে সু-উচ্চ থাম বানিয়ে তাতে অগ্নি সংযোগ করে ‘হোলিকা দহন’ হয় এবং পরের দিন রঙ খেলা হয় । বাংলাতেও দোলের আগের দিন এইরকম হয় যদিও তার
হিন্দু/সনাতনীর হোলি বা দোলযাত্রাঃ হোলি বা দোলযাত্রা
স্কন্দপুরাণ গ্রন্থের ফাল্গুনমাহাত্ম্য গ্রন্থাংশে হোলিকা ও প্রহ্লাদের উপাখ্যান বর্ণিত আছে। হোলিকা ছিলেন মহর্ষি কশ্যপ ও তাঁর পত্নী দিতির পুত্র হিরণ্যকশিপুর বোন। ব্রহ্মার বরে হিরণ্যকশিপু দেব ও মানব বিজয়ী হয়ে দেবতাদের অবজ্ঞা করতে শুরু করেছিলেন। ভক্ত প্রহ্লাদ অসুর বংশে জন্ম নিয়েও পরম ধার্মিক ছিলেনএজন্য তাঁকে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও হত্যা করা যাচ্ছিল না।তখন হিরণ্যকিশপুর বোন হোলিকা প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে আগুনে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন। কারন ছিলো যে, হোলিকা এই বর পেয়েছিল আগুনে তার কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু অন্যায় কাজে শক্তি প্রয়োগ করায় হোলিকা প্রহ্লাদকে নিয়ে আগুনে প্রবেশ করলে বিষ্ণুর কৃপায় প্রহ্লাদ অগ্নিকুণ্ড থেকেও অক্ষত থেকে যায় আর ক্ষমতার অপব্যবহারে হোলিকার বর নষ্ট হয়ে যায় এবং হোলিকা পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যায়,আর সেই থেকেই হোলি কথাটির উৎপত্তি।
অপরদিকে বসন্তের পূর্ণিমার এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কেশি নামক অসুরকে বধ করেন এবং কোথাও আবার অরিষ্টাসুর নামক অসুর বধের কথাও আছে।এরপর অন্যায় শক্তিকে ধ্বংসের আনন্দ মহাআনন্দে পরিণত হয়। দোলযাত্রা বা হোলি উৎসব সংক্রান্ত পৌরাণিক উপাখ্যান ও লোককথাগুলি মূলত দুই প্রকার: ১ম টি দোলযাত্রার পূর্বদিন পালিত বহ্ন্যুৎসব হোলিকাদহন বা নেড়াপোড়া সংক্রান্ত ও ২য়টি রাধা ও কৃষ্ণের দোললীলা বা ফাগুখেলা কেন্দ্রিক।
বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিনে বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির বা গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের সহিত রং খেলায় মেতেছিলেন, সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হিসেবেও মানা হয়। দোলযাত্রা/হোলির দিন সকালে তাই রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নাত করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়ে থাকে,তারপরে ভক্তেরা আবির ও গুলাল নিয়ে পরস্পর রং খেলা শুরু করেন। তাই দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। এছাড়াও এই পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত মানা হয়। |
ব্যাপকতা কম।দোলযাত্রা উৎসবের ধর্মনিরপেক্ষ দিকও রয়েছে।ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকাল থেকেই নারীপুরুষ আবির, গুলাল ও বিভিন্ন প্রকার রং নিয়ে খেলায় মত্ত হয়। শান্তিনিকেতনে নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্তোৎসব পালনের রীতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকেই চলছে। যেহেতু উৎসবটি রং নিয়েই তাই কিশোর এবং তরুণদের মধ্যে রঙের প্যাকেট একটি উল্লেখযোগ্য উপহার। এই উৎসবের তাৎপর্য একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের সবচেয়ে ভালো উপায় পছন্দের মানুষকে মিষ্টি মুখ করানো। হিন্দু ধর্মের কোনো কোনো গোত্র এই দিনে বিবাহিত মেয়েকে এবং মেয়ের জামাইকে নতুন কাপড় উপহার দেয়। হোলির আগের দিন শ্রীকৃষ্ণের পূজা করা হয়। তখন শুকনো রং ছিটানো হয়। এই হোলির জন্য শাঁখারি বাজারে প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার রং আবির এবং বিভিন্ন ওয়াটার গান বিক্রি হয়।বিভিন্ন ধরনের দেশি-বিদেশি রঙের পসরা নিয়ে বসে দোকানিরা। হোলি খেলার দিন তাঁতিবাজার, সুতারনগর, শাঁখারিবাজার, গোয়ালনগর, রায়সাহেব বাজার, ঝুলবাড়িসহ আরো কিছু কিছু মহল্লার দোকানগুলো হোলি খেলার সময়ে বন্ধ থাকে। কেউ কেউ হোলি না খেললেও জানালার পাশে দাঁড়িয়ে অথবা বাড়ির ছাদে উঠে উপভোগ করেন হোলি খেলা। অনেকে বিশ্বাস করে এই রঙ খেলার মাধ্যমে নিজেদের সব অহংকার, ক্রোধ যেনো শেষ হয়ে যায় এবং সকলে মিলেমিশে উপভোগ করে এই হোলি উৎসব বা দোল পূর্ণিমা।সুতরাং দোল পূর্ণিমা মহৎ একটি উৎসব যা আমরা আনন্দের সঙ্গে পালন করি। এই দিন সকলের মন প্রাণ রঙে রঙে ভরে ওঠে। এই দিন বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে বসন্ত উৎসব পালিত হয়। |
হোলির দিন বাড়িতে করণীয়
হোলির দিন কিছু টোটকার মাধ্যমে জীবন সুখ সমৃদ্ধিতে ভরে উঠতে পারে। যেনে নেওয়া যাক অর্থ, শিক্ষা, ব্যবসা ও কেরিয়ারের জন্য কোন রং ব্যবহার করা শুভ।
#একটু হলুদ, গঙ্গাজল ও দুধ এক সঙ্গে মিশিয়ে বাড়ির সদর দরজার সামনে ওঁ এবং স্বস্তিক চিহ্ন আঁকুন।
#রাতে অবশ্যই চন্দ্র দর্শন করতে হবে অর্থাৎ চাঁদের দিকে বেশ কিছু ক্ষণ একটানা তাকিয়ে থাকতে হবে।
# বাড়ির সদর দরজা আমের পল্লব দিয়ে সাজাতে হবে।
#অবশ্যই নিরামিষ খেতে হবে।
#রং খেলার আগে অবশ্যই নিজের পছন্দ মতো রং শ্রীকৃষ্ণের চরণে অর্পণ করে তারপরে রং খেলা শুরু করুন।
অর্থের জন্য: অর্থের জন্য গোলাপি রং
স্বাস্থ্যের জন্য: লাল রং স্বাস্থ্যের জন্য ।
শিক্ষার জন্যে:হলুদ রং শিক্ষার জন্য ।
কেরিয়ারের জন্য: নীল রং কেরিয়ারের জন্য ।
অন্যান্য রং ব্যবহারের সঙ্গে এই রংগুলো অবশ্যই ব্যবহার করবেন।
সকলকে হোলির শুভেচ্ছা।
#অবশ্যই বাড়িতে সত্যনারায়ণের ব্রত পালন করতে হবে।
#একটু হলুদ, গঙ্গাজল ও দুধ এক সঙ্গে মিশিয়ে বাড়ির সদর দরজার সামনে ওঁ এবং স্বস্তিক চিহ্ন আঁকুন।
#রাতে অবশ্যই চন্দ্র দর্শন করতে হবে অর্থাৎ চাঁদের দিকে বেশ কিছু ক্ষণ একটানা তাকিয়ে থাকতে হবে।
# বাড়ির সদর দরজা আমের পল্লব দিয়ে সাজাতে হবে।
#অবশ্যই নিরামিষ খেতে হবে।
#রং খেলার আগে অবশ্যই নিজের পছন্দ মতো রং শ্রীকৃষ্ণের চরণে অর্পণ করে তারপরে রং খেলা শুরু করুন।
দোল পূর্ণিমা ও হোলির জন্য কি কি রং ব্যবহার করবেনঃ
অর্থের জন্য: অর্থের জন্য গোলাপি রং
স্বাস্থ্যের জন্য: লাল রং স্বাস্থ্যের জন্য ।
শিক্ষার জন্যে:হলুদ রং শিক্ষার জন্য ।
কেরিয়ারের জন্য: নীল রং কেরিয়ারের জন্য ।
অন্যান্য রং ব্যবহারের সঙ্গে এই রংগুলো অবশ্যই ব্যবহার করবেন।
সকলকে হোলির শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ